সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল বছরখানেক আগেই। বলা হয়েছিল, ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ হিসেবে উচ্চশিক্ষা ও চাকরির ব্যাপারে নিজেদের অধিকার সুনিশ্চিত করতে পারবেন বৃহন্নলারা। অথচ, এ বার সুপ্রিম কোর্টের এই রায় অবমাননার অভিযোগ উঠল ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন (ইউপিএসসি)-এর বিরুদ্ধে। চলতি বছরে তাঁদের পরীক্ষার ফর্মে কোথাও ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ লেখার জায়গা নেই! বিষয়টি নিয়ে ইউপিএসসি-র কাছে দিল্লি হাইকোর্ট কৈফিয়ত দাবি করে দিন দুয়েক আগেই। বুধবার, এ বিষয়ে তাদের অপারগতার কথা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিন ইউপিএসসি।
বিচারপতি মুক্ত গুপ্ত এবং পি এস তেজির ডিভিশন বেঞ্চ বিষয়টি নিয়ে কড়া কথা শুনিয়েছে ইউপিএসসি-কে। বিষয়টি নিয়ে একই সঙ্গে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় ডিপার্টমেন্ট অফ পার্সোনেল অ্যান্ড ট্রেনিং (ডিওটি)-কেও। দুই বিভাগের কাছে বিচারপতিরা জানতে চান, “সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ জানিয়েছে ২০১৪-র ১৫ এপ্রিল। তার পরেও আপনারা সেটা মেনে চলেননি। কেন? আপনারা কি সব রকম অধিকার থেকে তৃতীয় লিঙ্গকে দূরে সরিয়ে রাখতে চান?”
জবাবে ইউপিএসসি জানিয়েছে, শীর্ষ আদালত এখনও তৃতীয় লিঙ্গের সংজ্ঞা স্পষ্ট করেনি। সে জন্য তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে কারা পরীক্ষা দিতে পারবেন, তাই নিয়ে বিভ্রান্তি রয়ে গিয়েছে। শুধু মাত্র এ কারণেই তারা ফর্মে তৃতীয় লিঙ্গের জায়গা রাখতে পারেনি।
ইউপিএসসি-এর এই জবাবে অবশ্য বিতর্ক থামছে না। এমনকী, বিষয়টি নিয়ে আইনজীবী জামশেদ আনসারি একটি জনস্বার্থ মামলাও দায়ের করেছেন দিল্লি হাইকোর্টে। সেই মামলায় আইনজীবী ইউপিএসসি-এর বক্তব্যকে নস্যাৎ করে জানিয়েছেন, শীর্ষ আদালত তৃতীয় লিঙ্গের সংজ্ঞা নিয়ে এমন কোনও বিভ্রান্তি তৈরি করেনি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে, ‘হিজড়া’, ‘ইউনাখ’, ‘কোঠি’, ‘আরাবানি’, ‘যোগাপ্পা’, ‘শিব-শক্তি’— এই সব নামে পরিচিত সব মানুষই তৃতীয় লিঙ্গের অন্তর্ভুক্ত।