গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
মুম্বইয়ের ধারাভি বস্তির পুনর্গঠন প্রকল্পের দায়িত্ব হাতছাড়া হচ্ছে না আদানি গোষ্ঠীর। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। ওই প্রকল্পের বরাতের ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ তুলে স্থগিতাদেশ চেয়ে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সংস্থা সেকলিঙ্ক টেকনোলজিস কর্পোরেশন আবেদন জানিয়েছিল। কিন্তু তা খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। তবে বরাত পাওয়ার বিষয়ে আদানির সংস্থার বক্তব্য় জানতে চেয়ে নোটিস পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চ।
২০২২ সালে বিজেপি-শিন্ডেসেনা জোটের সরকার ধারাভি বস্তির পুনর্গঠন প্রকল্পের পুরনো বরাত বাতিল করেছিল। ৫০৭০ কোটি টাকার নতুন দরপত্র দিয়ে বরাত জিতেছিল গৌতম আদানির সংস্থা আদানি প্রপার্টিজ়। সেই সঙ্গে ২০১৮ সালের বরাত বাতিলকে কেন্দ্র করে বিতর্কের সূত্রপাত হয়। সেই বরাত পেয়েছিল দুবাইয়ের সংস্থা সেকলিঙ্ক টেকনোলজিস কর্পোরেশন। এর আগে বম্বে হাই কোর্টেও স্থগিতাদেশের আবেদন জানিয়ে বিফল হয়েছিল তারা। সুপ্রিম কোর্ট শুক্রবার জানিয়েছে, প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। কিছু রেলওয়ে আবাসন ভেঙে ফেলাও হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ধারাভি প্রকল্পের জন্য আদানিকে পৃথক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট তৈরি করে হিসাব রাখার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
২০২২ সালে বরাত বাতিল করে ফের দরপত্রের প্রক্রিয়া শুরু করেছিল তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্দের সরকার। সে সময় বিরোধীরা অভিযোগ করেছিল, আদানিদের স্বার্থে বরাত বাতিল করে যোগ্যতার মাপকাঠি বদল করা হয়েছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ধারাভি প্রকল্পের বরাত আদানির পাওয়াকে ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ভারত দখলে’র সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা শিবসেনা (ইউবিটি)-র নেতা উদ্ধব ঠাকরে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, মহারাষ্ট্রে বিরোধী জোট ক্ষমতায় ফিরলে আদানির হাত থেকে ধারাভি প্রকল্প কেড়ে নেওয়া হবে।
যদিও অনিয়মের অভিযোগ উড়িয়ে মহারাষ্ট্রে বিজেপি জোটের সরকার দাবি করেছিল, করোনার পরে অর্থনীতির পরিস্থিতি বদলের জন্যই এই সিদ্ধান্ত। সুবিধা পাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে আদানিদের দাবি, কাজ শেষ হলে তা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও আদর্শ বস্তি পুনর্গঠন প্রকল্প হয়ে উঠবে। প্রস্তাবিত প্রকল্প অনুযায়ী, প্রায় ৬২০ একর জমির পুনর্গঠন করবে তারা। পুনর্বাসন হবে সাত লক্ষ বাসিন্দার। ধারাভিতে ১০ লক্ষ মানুষ থাকলেও ২০০০ সালের ১ জানুয়ারির আগে বসবাসের প্রমাণপত্র যাঁদের রয়েছে, তাঁরাই এখানে পুনর্বাসন পাওয়ার যোগ্য।