চিঁড়ে ভিজল না আজও।
নোট বাতিল নিয়ে বিরোধীদের চাপ তো আছেই। তার উপর কেন্দ্রের আর্জিতে আজ ফের বেঁকে বসল শীর্ষ আদালত। নোট বাতিলের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন হাইকোর্ট ও নিম্ন আদালতে যে সব মামলা হয়েছে, তার উপর এখনই স্থগিতাদেশ দেওয়া যাবে না বলে জানিয়েছে প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুরের বেঞ্চ। কেন্দ্র আরও চেয়েছিল, বিভ্রান্তি এড়াতে এই সংক্রান্ত সব মামলার শুনানি হোক একটা নির্দিষ্ট আদালতে। এ নিয়ে শীর্ষ আদালতে পরবর্তী শুনানি ২ ডিসেম্বর।
নোট-কাণ্ডে কেন্দ্রকে বিঁধতে আজই প্রথম রাজনৈতিক দল হিসেবে সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন করেছে সিপিএম। নোট বাতিলের জেরে অব্যবস্থা চলতে থাকলে দেশে দাঙ্গা লেগে যেতে পারে বলে হুঁশিয়ার করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। এ দিন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির দায়ের করা আর্জিতেও তারই ইঙ্গিত মিলেছে। পাশাপাশি, ব্যাঙ্কে পড়ে থাকা লক্ষ-লক্ষ কোটি টাকার অনাদায়ী ঋণ নিয়েও সুর চড়িয়েছে সিপিএম। সরকার কেন বড়-বড় ঋণখেলাপিদের নাম প্রকাশ করছে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে এই আবেদনে।
প্রধানমন্ত্রীর নোট বাতিল সংক্রান্ত ঘোষণার পরে সুপ্রিম কোর্ট এই নিয়ে তিন বার কেন্দ্রের সমালোচনা করল। সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ এড়াতে কতটা কাজ এগিয়েছে, কেন্দ্রের কাজে আজ ফের জানতে চেয়েছে আদালত।
অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতাগি বোঝানোর চেষ্টা করেন, ‘পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক ভাল’। কৃষকদের বাড়তি সুবিধা দিতেও কাজ অনেকটা এগিয়েছে বলে জানান রোহতাগি। পাশাপাশি, ব্যাঙ্ক ও এটিএমের বাইরে টাকা তোলার লাইন কমছে বলেও দাবি করেন তিনি। কেন্দ্রের যুক্তি, টাকার অভাব নেই। শুধু দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তা পৌঁছে দেওয়া নিয়েই সমস্যা হচ্ছে।
কিন্তু টাকা জমা পড়ল কতটা? আজ প্রধান বিচারপতির প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, এরই মধ্যে প্রায় ৬ লক্ষ ঢুকেছে। তাঁর দাবি, ডিসেম্বর শেষ হওয়ার আগেই অন্তত ১৫ লক্ষ কোটি টাকা জমা পড়বে সরকারের খাতায়। জমার অঙ্ক নিয়ে শীঘ্রই সরকারি তরফে হলফনামা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত যে ‘কার্পেট বম্বিং’ নয়, বরং দেশেরই ভালর জন্য— কোর্টকে এ দিন তা দফায় দফায় বোঝানোর চেষ্টা করেন রোহতাগি। সপ্তাহ দু’য়েকের মধ্যেই কী ভাবে টাকার ‘ডিজিট্যাল ব্যবহার’ বেড়েছে তারও সবিস্তার ব্যাখ্যা করেন। কিন্তু বরফ গলেনি। অ্যাটর্নি জেনারেলের দাবি করেন, নোট বাতিলের জেরে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বিশেষ একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। প্রত্যেক দিন, প্রতিটি ঘণ্টার হিসেব নিচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু তাতে দুর্ভোগ কি সত্যিই কমেছে? কেন্দ্রের কোর্টে বল ঠেলে প্রশ্নটা রেখেই দিল সুপ্রিম কোর্ট।