গ্রাফিক —শৌভিক দেবনাথ
কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে অস্বস্তি এড়াতে পারছে না কেন্দ্রীয় সরকার। নাগরিকদের আটক করার ঘটনা নিয়ে বুধবার সুপ্রিম কোর্টে তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল কেন্দ্রীয় সরকার এবং জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনকে। উপত্যকার পরিস্থিতি তুলে ধরে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছিল শীর্ষ আদালতে। কেন দুই সরকার তার উত্তর দিতে পারেনি? এ দিন তা-ও জানতে চায় ক্ষুব্ধ আদালত।
কাশ্মীরে বিধিনিষেধের বেড়াজাল এবং নাগরিকদের স্বাধীনতা খর্ব করার অভিযোগ তুলে একাধিক আবেদন জমা পড়েছিল শীর্ষ আদালতে। তার মধ্যেই একটি আবেদন ছিল প্রবাসী ভারতীয় আসিফা মুবিনের। তাঁর স্বামীকে কাশ্মীর থেকে আটক করা হয়। তাতে ব্যক্তি স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন আসিফা।
সুপ্রিম কোর্ট জম্মু-কাশ্মীর সরকারের কাছে জানতে চায়, কেন এ ক্ষেত্রে হলফনামা দাখিল করা হয়নি? জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয় যে, তারা পাঁচ মিনিটেই হলফনামা দাখিল করতে পারে। কেন ওই সব অভিযোগের জবাব দিতে দেরি হয়েছে, তার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‘‘মধ্যস্থতাকারীদের আবেদনের চাপেই তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।’’ এর পরেই ক্ষুব্ধ সুপ্রিম কোর্ট দুই সরকারের আইনজীবীকেই সাফ জানিয়ে দেয়, ‘যা বলবেন মেনে নেব, এটা ধরে নেবেন না (ডোন্ট টেক আস ফর গ্র্যান্টেড)।’
আরও পড়ুন: ‘যথেষ্ট হয়েছে, আজ বিকেলে অযোধ্যা শুনানি শেষ হতেই হবে’, বললেন প্রধান বিচারপতি
আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবী হুজিফা আহমদি বলেন, ‘‘প্রশাসন যদি আবেদনকারীদের সরকারি নির্দেশ না দেখাতে পারে, তা হলে অবশ্যই তা আদালতে পেশ করা উচিত। কাশ্মীরে প্রত্যেকটি আটকের ঘটনার ক্ষেত্রে তাদের যুক্তিগ্রাহ্য কারণ ব্যাখ্যা করা উচিত।’’ এর পরেই শীর্ষ আদালত দুই সরকারকেই নাগরিকদের আটক করার জন্য উপযুক্ত সরকারি অর্ডার পেশ করার নির্দেশ দেয়। অনেক মোবাইল ব্যবহারকারীরই অভিযোগ, উপত্যকায় গত দু’মাস ধরে টেলি যোগাযোগ পরিষেবা বন্ধ থাকলেও তার বিল জমা দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলি। এ বিষয়টি নিয়ে ওই সংস্থাগুলির সঙ্গে কথা বলার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
আরও পড়ুন: সাভারকরকে ভারতরত্ন দেওয়ার প্রস্তাব, মহারাষ্ট্র বিজেপির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে বিতর্ক
আবেদনকারীদের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘এখন মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারীরা গ্রাহকদের টাকা জমা দিতে বলছে এবং টেলি পরিষেবা পুনর্বহাল করতেও অস্বীকার করছে। আমরা চাই, সরকার টেলি পরিষেবা ফের চালু করতে নির্দেশ দিক।’’ আগামী ২৪ অক্টোবর ফের ওই মামলার শুনানি হবে শীর্ষ আদালতে।