প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সত্যপাল মালিক। ফাইল চিত্র।
বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়ে ফের বেসুরো জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সত্যপাল মালিক।
রাজস্থানে এক সভায় সত্যপাল মালিক দাবি করেছেন, তিনি জম্মু-কাশ্মীরের দায়িত্বভার নেওয়ার পরে দেশের একটি প্রথম সারির শিল্পগোষ্ঠী (যেটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ বলে বিরোধীদের অভিযোগ) এবং আরএসএস-ঘনিষ্ঠ এক নেতার দু’টি ফাইল পাশ করানোর জন্য তাঁর কাছে পেশ করা হয়। বলা হয়, ওই দু’টি ফাইল পাশ করালে তাঁকে ৩০০ কোটি টাকা ‘ঘুষ’ দেওয়া হবে। কিন্তু তিনি দু’টি ফাইলই ফেরত পাঠান এবং বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জানান। মালিকের দাবি, মোদী তাঁকে দুর্নীতির সঙ্গে আপস না করারই পরামর্শ দিয়েছিলেন।
এমনিতেই গত কয়েক দিনে একাধিক বার তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারী কৃষকদের সরাসরি সমর্থন করে মুখ খুলে মোদী সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন সত্যপাল মালিক। এ বারে মোদী-ঘনিষ্ঠ শিল্পগোষ্ঠী এবং উপত্যকার আরএসএস-ঘনিষ্ঠ নেতার দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে ফের বিজেপির অস্বস্তি বাড়ালেন মেঘালয়ের রাজ্যপাল।
মালিকের অভিযোগ ঠিক কী?
মালিকের দাবি, ২০১৮ সালে তিনি জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল হওয়ার পরে তাঁর কাছে দু’টি ফাইল পাস করানোর জন্য পাঠানো হয়। তার একটি ছিল বৃহৎ ওই শিল্পগোষ্ঠীটির সঙ্গে উপত্যকার সরকারি কর্মচারি, পেনশনভোগী এবং সরকার স্বীকৃত সাংবাদিকদের গোষ্ঠী স্বাস্থ্যবিমা সংক্রান্ত চুক্তির ফাইল। অন্যটি ছিল মেহবুবা মুফতি মন্ত্রিসভার আরএসএস-ঘনিষ্ঠ এক সদস্যের একটি ফাইল। তাঁকে বলা হয়, মুফতি মন্ত্রিসভার আরএসএস-ঘনিষ্ঠ ওই সদস্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরও বিশেষ ঘনিষ্ঠ। প্রতিটি ফাইল পাশ করানোর জন্য তাঁকে ১৫০ কোটি করে মোট ৩০০ কোটি টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু মালিক জানিয়ে দেন, তিনি দুর্নীতির সঙ্গে আপস করবেন। মালিকের কথায়, ‘‘আমি ওঁদের (আধিকারিকদের) বলেছিলাম, আমি ৫টা কুর্তি নিয়ে এসেছি, ৫টা কুর্তি নিয়েই ফিরে যাব।’’
মালিকের দাবি, বিষয়টি নিয়ে আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে তিনি কেলেঙ্কারির আঁচ পান। তার পরেই বিষয়টি তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানান। প্রধানমন্ত্রী তাঁকে দুর্নীতির সঙ্গে সমঝোতা করতে মানা করার পরে দু’টি ফাইলই ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ২০১৮ সালেই মোদী-ঘনিষ্ঠ বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে উপত্যকার সরকারি কর্মচারি, পেনশনভোগী এবং সরকার স্বীকৃত সাংবাদিকদের গোষ্ঠী স্বাস্থ্যবিমা সংক্রান্ত চুক্তিটি বাতিল করা হয়। বিষয়টি খতিয়ে দেকার জন্য দুর্নীতি দমন শাখাকেও জানানো হয়।
মালিকের অভিযোগ প্রসঙ্গে মোদী-ঘনিষ্ঠ শিল্পগোষ্ঠীটির তরফে কোনও বক্তব্য মেলেনি। তবে গোটা বিষয়টি নিঃসন্দেহে অস্বস্তি বাড়িয়েছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের।