গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আড়াই দশক আগে বয়স ভাঁড়িয়ে বিহারে মন্ত্রী হওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। অভিযোগের প্রমাণ মেলার পরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর সরকারের নিযুক্ত রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ী দেবীর মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করেছিল তাঁকে। সেই ‘দাগি’ নেতা সম্রাট চৌধরি বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী হলেন নরেন্দ্র মোদীর জমানায়। অবশ্য, বহু বার দলবদলু এই নেতা আপাতত বিজেপিতে।
‘তাৎপর্যপূর্ণ’ ভাবে ১৯৯৯ সালের ওই ঘটনায় ২৫ বছরের কমবয়সি সম্রাটের বিরুদ্ধে বয়স ভাঁড়িয়ে মন্ত্রী হওয়ার অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি এবং তার জোটসঙ্গী নীতীশ কুমার। খগড়িয়া-মুঙ্গের জেলার প্রভাবশালী কইরি জনগোষ্ঠীর নেতা শকুনি চৌধরি এবং তাঁর পুত্র সম্রাট তখন আরজেডি। লালু প্রসাদ-রাবড়ী দেবীর ‘ঘনিষ্ঠ’ নেতা। পটনার রাজভবনে আসীন বাজপেয়ী সরকার নিযুক্ত প্রাক্তন বিজেপি নেতা সুরজ ভান। অভিযোগ পেয়েই সক্রিয় হয়েছিলেন তিনি। তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
তদন্তে দেখা গিয়েছিল ২৫ বছর বয়স না হওয়া সত্ত্বেও জাল শংসাপত্র পেশ করে রাবড়ী মন্ত্রিসভায় ঠাঁই করে নিয়েছেন শকুনি-পুত্র। যা অসাংবিধানিক। এর পরেই দ্রুত সম্রাটকে মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করেছিলেন রাজ্যপাল সুরজ। এর পর নীতীশের জেডিইউ ঘুরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন সপুত্র শকুনি। নীতীশ মন্ত্রিসভায় সম্রাট মন্ত্রীও হয়েছিলেন। কিন্তু নীতীশের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে বিজেপিতে যোগ দেন পিতা-পুত্র। বিধান পরিষদের বিজেপি সদস্য হিসাবে ২০২১-এ নীতীশের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের পঞ্চায়েত মন্ত্রী হয়েছিলেন সম্রাট। ২০২৩-এ তাঁকে রাজ্য বিজেপির সভাপতির দায়িত্ব দেন মোদী-শাহেরা।
দায়িত্ব পেয়ে সম্রাট ‘প্রতিজ্ঞা’ করেছিলেন ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ নীতীশকে পটনার কুর্সি থেকে উৎখাত না করা পর্যন্ত তিনি মাথার পাগড়ি খুলবেন না! ঘটনাচক্রে, রবিবার বিকেলে পাগড়ি পরেই নীতীশের নয়া মন্ত্রিসভায় উপমুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন সম্রাট। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্তে তিনি হলেন নীতীশের অন্যতম ‘ডেপুটি’। সম্রাট ছাড়া বিহারের নতুন সরকারে উপমুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন বিজেপি নেতা বিজয়কুমার সিন্হা। যিনি আবার রবিবার সকাল পর্যন্ত বিহার বিধানসভার বিরোধী দলনেতা হিসেবে নীতীশ-তেজস্বী সরকারের প্রবল বিরোধী ছিলেন।