এনসিপি নেতা এবং মহারাষ্ট্রের ক্যাবিনেট মন্ত্রী নবাব মালিকের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)-র জোনাল ডিরেক্টর সমীর ওয়াংখেড়ের বাবা। সমীরের আইনজীবী সেই মামলা সংক্রান্ত বেশ কিছু নথিপত্র বৃহস্পতিবার জমা দিয়েছেন বম্বে হাই কোর্টে। আদালতে নবাবের আইনজীবীরা দাবি করেন, সমীরের বাবার আসল নাম দাউদ।
শাহরুখ খানের পুত্র আরিয়ান খানকে গ্রেফতারির সময় নবাব অভিযোগ করেছিলেন চাকরি পেতে সমীর ওয়াংখেড়ে জাল জাতি-শংসাপত্র দেখিয়ে ইউপিএসপি পরীক্ষায় সংরক্ষণের সুবিধা নিয়েছিলেন। মুসলিম হয়েও তিনি নিজেকে হিন্দু জনজাতির প্রতিনিধি হিসাবে দেখিয়েছিলেন। এর পরই মামলা করেন সমীরের বাবা ধ্যানদেব ওয়াংখেড়ে।
দুই পক্ষের আইনজীবীই বৃহস্পতিবার বেশ কিছু নথি জমা করেছেন। এর মধ্যে নবাবের আইনজীবী অতুল দামলে এবং কুণাল দামলে বিচারপতি মাধব জামদারের বেঞ্চে তিনটি নথি জমা দিয়েছেন। এই নথির মধ্যে রয়েছে বহন্মুম্বই মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের (বিএমসি) জনস্বাস্থ্য অফিসারের একটি চিঠি এবং সমীরের নাম পরিবর্তনের জন্য তাঁর অভিভাবকের দেওয়া বিবৃতি। সেন্ট জোসেফ হাই স্কুলে সমীরের ভর্তি হওয়া এবং ছাড়ার শংসাপত্র এবং সেন্ট পল হাই স্কুল ছাড়ার শংসাপত্র।
অন্য দিকে ওয়াংখেড়ের আইনজীবী ছিলেন আর্শাদ শেখ এবং দিবাকর রাই আদালতে দু’টি নথি জমা দিয়েছেন। বিএমসি-র দেওয়া জন্মের ডিজিটাল শংসাপত্র এবং সমীরের বাবা ধ্যানদেবের জাতির শংসাপত্র। আর্শাদ বলেছেন, ‘‘যে শংসাপত্রের উপর মালিক নির্ভর করে বসে আছেন তা বিএমসি-র থেকে নেওয়া। মালিক টুইট করার পর সেগুলি নেওয়া হয়েছিল। যে কাজ টুইট করার আগে করার ছিল তা তিনি পরে করেছেন।’’ বিএমসি-তে মালিকের একটি লেখা একটি চিঠির প্রসঙ্গও তুলেছেন ওয়াংখেড়ের আইনজীবী। সেখানে বিএমসি মন্ত্রী নবাবকে চিঠিতে জানাচ্ছে ১৯৭৯ সালে ধ্যানদেবের নাম ছিল দাউদ কে ওয়াংখেড়ে। ১৯৯৩ সালে সাব-রেজিস্ট্রার তার নাম বদলে ধ্যানদেবে অনুমোদন দেন।
সমীর ওয়াংখেড়ের নাম মুসলিম হিসাবে নথিভুক্ত!
মালিক আদালতে অতিরিক্ত যে হলফনামা জমা দিয়েছেন তাতে লেখা, ‘সমীর ওয়াংখেড়ের স্কুলের নথিতে তাঁকে মুসলিম হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কারণ তাঁর বাবার নাম ছিল দাউদ ওয়াংখেড়ে।’ সেই হলফনামায় আরও আরও লেখা আছে, দাউদ কে ওয়াংখেড়ের নাম ধ্যানদেব কাচরুজি ওয়াংখেড়ে হয়েছে। কিন্তু তাঁর ধর্মের কোনও পরিবর্তন হয়নি। আজকের দিনেও তিনি মুসলিম। এই প্রশ্ন যখন বৃহস্পতিবার বিচারপতি করেছিলেন তখন কিছু বিড়ম্বনাতেই পড়েন ওয়াংখেড়ের আইনজীবী। তিনি আইনজীবীকে জানান, স্কুলে এটা ভুল হয়েছিল। তা নজরে আসায় পরিবর্তনও করা হয়েছিল। মালিক এখনও সমীরের বাবাকে দাউদ বলে অভিহিত করায় আদালতে বিরোধিতা করেন ওয়াংখেড়ের আইনজীবীরা। সওয়ালের সময় আদালতকে তিনি ব্যঙ্গাত্মক ভাবে বলেন, ‘‘পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় সমীর জেনে গিয়েছিল, সে অফিসার হবে এবং তাঁর জাতির শংসাপত্র পরিবর্তনের দরকার পড়বে।’’