সফুরা জারগার। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।
অবশেষে প্রায় আড়াই মাস পরে জামিনে মুক্ত হলেন সফুরা জারগার। ‘মানবিক কারণে’ সফুরার জামিনে আপত্তি নেই বলে আদালতে জানান দিল্লি পুলিশের আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। এর পরই মঙ্গলবার সফুরার আবেদন মঞ্জুর করে দিল্লি হাইকোর্ট।
জামিন মিললেও আপাতত রাজধানীর বাইরে যেতে পারবেন না সফুরা। সেই সঙ্গে তাঁকে দশ হাজার টাকা বন্ডও জমা রাখতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি রাজীব শকধর।
জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার রিসার্চ স্কলার তথা সিএএ আন্দোলনের কর্মী সফুরাকে গত ১০ এপ্রিল গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল। সিএএ বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে হিংসার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগ আনে দিল্লি পুলিশ। গ্রেফতারির পর সাতাশ বছরের সফুরার বিরুদ্ধে ইউএপিএ আইনে মামলাও রুজু করে তারা। তিহাড় জেলে বন্দিদশা থেকে জামিনের আবেদন করলেও তা তিন বার খারিজ হয়ে যায় দিল্লির পাটিয়ালা হাউস কোর্টে। অন্তঃসত্ত্বা হওয়া সত্ত্বেও শারীরিক কারণে তাঁর আবেদন যাতে মঞ্জুর না হয়, তা নিয়ে আদালতে সওয়ালও করে দিল্লি পুলিশ। তাদের যুক্তি ছিল, তিহাড় জেলেই গত ১০ বছরে প্রসব হয়েছে ৩৯ জনের। ফলে অন্তঃসত্ত্বা হলেও যে তাঁকে জামিন দিতে হবে, এমনটা হওয়া উচিত নয়। তবে এ দিন দিল্লি পুলিশের আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানিয়েছেন, কেবলমাত্র ‘মানবিক কারণে’ই সফুরার জামিনে কোনও আপত্তি নেই।
আরও পড়ুন: সেনা পিছোতে রাজি চিন, কোর কমান্ডার বৈঠকে ‘পারস্পরিক ঐকমত্য’
আরও পড়ুন: তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ দরকার নেই ভারত-চিনের, বলল রাশিয়া
যদিও জামিনে আপত্তি না থাকলেও সফুরা যাতে দিল্লিতে পা রাখতে না পারেন, সেই শর্ত আরোপের জন্য আদালতে আবেদন করেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। যদিও তাতে আপত্তি করে সফুরার আইনজীবী নিত্যা রামকৃষ্ণন জানান, তাঁর মক্কেলের স্বামী এবং চিকিৎসক, দু’জনেই দিল্লিতে রয়েছেন। বিচারপতি সেই আপত্তি গ্রাহ্য করে জানান, বরং দিল্লি থেকে বেরতে হলে সংশ্লিষ্ট আদালতের অনুমতি নিতে হবে সফুরাকে। পাশাপাশি, তদন্তকারীদের সঙ্গে মোবাইলে ১৫ দিনে অন্তত এক বার যোগাযোগ রাখতে হবে। সেই সঙ্গে দিল্লি পুলিশের তদন্তে যাতে বাধাদান বা প্রভাবিত না করার চেষ্টা করেন সফুরা, সে নির্দেশও দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি, আদালত এ-ও জানিয়েছে, অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন জামিনের এই নির্দেশকে যেন ‘নজির’ হিসাবে গণ্য করা না হয়।