ছবি: এএফপি।
তিন বছর ধরে তেমন ভাল হয়নি ফলন। চলতি বছরের জাফরান ফলনে সেই ক্ষতি পুষিয়ে যেতে পারে বলে ভেবেছিলেন দক্ষিণ কাশ্মীরে পাম্পোরের জাফরান চাষিরা। কিন্তু অসময়ে প্রবল তুষারপাত তাঁদের সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছে।
জাফরান চাষিরা জানাচ্ছেন, কাশ্মীরে তুষারপাতের ফলে জাফরানের প্রায় ৪০ শতাংশ বরফের তলায় চাপা পড়েছে। জাফরান ফুল তোলা আর সম্ভব নয়।
পাম্পোরের ডাস্সু গ্রামের চাষি আরিফ জামালের কথায়, ‘‘এ বছরে ফলন ভাল হয়েছিল। কিন্তু কাশ্মীরে গোলমালের জন্য জাফরান ফুল তোলার কাজ শুরু করতে হয়েছিল অক্টোবরের শেষ দিকে। কিন্তু এখন জমি বরফের তলায়। ফুল তোলাও যাবে না।’’ কাশ্মীরে যখন অন্য সব ব্যবসাই বন্ধ তখন জাফরান থেকে আয়ের উপরেই ভরসা করছিলেন আরিফ। তাঁর কথায়, ‘‘এখন আমাদের কী হবে, কে জানে।’’ একই অবস্থা লেথপোরার ব্যবসায়ী ও জাফরান চাষি আব্দুল রশিদ মাগরের। বললেন, ‘‘দোকানপাট বন্ধ থাকায় ৫ অগস্টের পর থেকে রোজগার বিশেষ হয়নি। জাফরান থেকেও আয়ের সম্ভাবনা রইল না।’’
আরও পড়ুন: গাঁধীদের এসপিজি প্রত্যাহার নিয়ে লোকসভায় তুমুল হট্টগোল, কংগ্রেসের ওয়াকআউট, বেরিয়ে গেলেন অমিতও
জাফরান চাষি ও ব্যবসায়ীদের সংগঠনের সভাপতি গুলাম মহম্মদ পাম্পোরির নিজের এক একর জমিতে জাফরান চাষ হয়। তাঁর কথায়, ‘‘আগে জম্মু-কাশ্মীরের পাঁচ জেলার ২২৬টি গ্রামে জাফরান চাষ হত। এখন চাষের জমি কমেছে। সেইসঙ্গে ইরান, স্পেন, গ্রিসে জাফরান চাষ বাড়ায় প্রতিযোগিতার মুখেও পড়তে হচ্ছে। তবে কাশ্মীরি জাফরান এখনও অন্যতম শ্রেষ্ঠ জাফরান
হিসেবে পরিচিত।’’
পাম্পোরি জানাচ্ছেন, তাঁর জমি থেকে মাত্র ১০ কেজি জাফরান ফুল তোলা গিয়েছে। তা থেকে মাত্র তিন থেকে চার কেজি জাফরান পাওয়া যাবে। তুষারপাতের ফলে ক্ষতির কথা মেনে নিচ্ছেন পুলওয়ামার মুখ্য কৃষি আধিকারিক মহম্মদ কাসিম গণিও।
রান্না ছাড়াও জাফরান ব্যবহার হয় ওষুধ শিল্পে। বিশ্বের সবচেয়ে দামি মশলা হিসেবে পরিচিত জাফরানের কেজি প্রতি দাম দেড় থেকে আড়াই লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।