সচিন তেন্ডুলকর। ফাইল ছবি।
কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে ‘ইন্ডিয়া টুগেদার’ এবং ‘ইন্ডিয়া এগেনস্ট প্রোপাগান্ডা’ হ্যাশট্যাগে টুইট করার পর থেকেই দেশজুড়ে বিস্তর সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন সচিন তেন্ডুলকর। সোমবার মহারাষ্ট্রের সোলাপুর থেকে মুম্বইয়ে সচিনের বাড়ির সামনে এসে এক যুবক সচিনের ওই টুইটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছিলেন। কৃষকদের হয়ে টুইট করুন সচিন—এই দাবিও জানিয়েছিলেন। কেজরীবালের দল আম আদমি পার্টির (আপ) তরফেও এই আবেদন করা হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বকে।
সোমবার সন্ধ্যায় নিজের টুইটার হ্যান্ডলে সচিনের উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি লিখেছিলেন আপ নেত্রী প্রীতি শর্মা মেনন। সেখানেই তিনি সচিনকে কৃষকদের পক্ষে টুইট করতে আবেদন করেছেন। সোলাপুর থেকে সচিনের বাড়ি আসা ওই যুবকের অনুরোধের বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে চিঠিতে।
সেই চিঠিতে সচিনের উদ্দেশে লেখা হয়েছে, ‘আপনি ভারতের গর্ব। দেশের ১৩০ কোটি মানুষ আপনার জন্য প্রার্থনা করে, কাঁদে, আপনার সাফল্যে খুশি হয়। যে দেশে ক্রিকেটকে ধর্ম হিসাবে মানা হয়, সেখানে আপনি ঈশ্বর। ভারতরত্ন এবং সাংসদ হিসাবে যে সব মানুষ আপনাকে পুজো করেন, তাঁদের সকলের হয়ে আপনার ব্যাট ধরা উচিত’। এর পরই সোলাপুরের ওই যুবকের আবেদনে সাড়া দেওয়ার জন্য আপের তরফে অনুরোধ করা হয়েছে সচিনকে।
সেখানে লেখা হয়েছে, ‘সোলাপুর থেকে ৪০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে মুম্বইয়ে আপনার বাড়ি এসেছিল রাজনীত বাঘেল। পানধরপুর থেকে কৃষকের ওই সন্তান এসেছিলেন বান্দ্রার ‘দেবনগরী’তে। যেখানে সমস্ত মহারাষ্ট্রবাসী তীর্থ করতে যায়। ঈশ্বর সচিনের বাড়িতে এসে তাঁর প্রার্থনা ছিল— যে অন্নদাতারা কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছেন তাঁদের সমর্থনে অন্তত একটি টুইট করুন ক্রিকেট ঈশ্বর’। এর পরই ওই যুবকের আবেদনে সচিনকে সাড়া দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন ওই আপ নেত্রী।
এই চিঠির পাশাপাশি রাজনীত নামের ওই যুবকের সচিনের বাড়ির সামনে ধর্নার একটি ছবিও শেয়ার করা হয়েছে আপের তরফে। ওই যুবকের হাতে থাকা ব্যানারে দেখা যাচ্ছে স্বাভিমানী খেতকারী সংগনের নাম। এটি একটি কৃষক সংগঠন, যার নেতা প্রাক্তন সাংসদ রাজু শেট্টি। এই আবেদনে সচিন কী ভাবে সাড়া দেন সেটাই এখন দেখার।
সচিন তেন্ডুলকর, লতা মঙ্গেশকরদের ওই সব টুইট নিয়ে সোমবারই তদন্ত করার কথা বলেছিল মহারাষ্ট্র সরকার। কৃষি আইনের সমর্থনে এবং কৃষক আন্দোলনের বিপক্ষে তারকাদের এই সব টুইটের পিছনে কোনও চাপ ছিল কি না, সেই সব বিষয় খতিয়ে দেখার কথা মুম্বই পুলিশ। মহারাষ্ট্র স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রে খবর, তদন্তের দায়িত্বভার দেওয়া হয়েছে রাজ্যের গোয়েন্দা বিভাগকে। মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ বলেছিলেন, ‘‘এই টুইটগুলি সংঘবদ্ধ ভাবে করা হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখবে রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগ। সব টুইট প্রকাশিত হওয়ার সময় প্রায় এক। পাশাপাশি যে ভাবে ঐক্যবদ্ধ আকারে টুইট করা হয়েছে, তার পিছনে কোনও পরিকল্পনা রয়েছে।’’
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে মুখ খোলেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রাক্তন কর্তা প্রেসিডেন্ট শারদ পাওয়ার। এনসিপির প্রতিষ্ঠাতা সচিনকে ক্রিকেট ছাড়া অন্য বিষয়ে মন্তব্য করার আগে আরও বেশি সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।
তবে সাম্প্রতিক এই বিতর্ক নিয়ে মুখ খোলেননি সচিন।