বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। —ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রীর পর এ বার ইন্ডিয়া জোটকে ব্যঙ্গ করলেন বিদেশমন্ত্রীও।
সংসদের দু’টি কক্ষ যখন মণিপুর নিয়ে উত্তেজনায় ফুটছে, নিরুত্তাপ সরকার পক্ষ আজ কিছুটা অপ্রত্যাশিত ভাবেই বিদেশমন্ত্রীকে এগিয়ে দিলেন নরেন্দ্র মোদীর বিশ্বভ্রমনের কূটনৈতিক সাফল্য ব্যাখ্যায়। প্রবল হট্টগোলের মধ্যে তিনি লোকসভা এবং রাজ্যসভায় আধ ঘণ্টা করে কী বললেন তা বোধগম্য হয়নি কারও। এক দিকে ধ্বনি মোদীর নামে, অন্য দিকে ইন্ডিয়া বলে চিৎকার। পরে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। বিরোধীদের উদ্দেশে ক্ষুব্ধ জয়শঙ্করের বক্তব্য, “আপনারা নিজেদের ইন্ডিয়া বলে দাবি করছেন। কিন্তু আপনারা দেশের জাতীয় স্বার্থের বিষয়ে শুনতে আগ্রহী নন। তা হলে আপনারা কোন ধরনের ইন্ডিয়া?” তাঁর বক্তব্য, “বিরোধীদের এই পার্টিজ়ান রাজনীতি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।”
অধিবেশন থেকে বেরিয়েও ক্ষোভ গোপন করেননি জয়শঙ্কর। সাধারণত বিদেশমন্ত্রীরা যখন তখন মুখ খোলেন না, খুবই মেপে কথা বলেন। আর জয়শঙ্কর তো পেশায় ছিলেন বিদেশ মন্ত্রকের আমলা। কিন্তু সংশ্লিষ্ট শিবিরের মতে, গত কয়েক বছরে জয়শঙ্করের আমলা থেকে রাজনীতিবিদে পরিবর্তনের প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ হয়েছে। তিনি এখন বিজেপির বিভিন্ন নীতি নিয়ে খুবই সরব। আজও সংসদ চত্বরে রাখা মাইকের সামনে মুখ খুলেছেন জয়শঙ্কর। বলেছেন, “গত কয়েক মাসে কী কী ঘটেছে তা আমি সংসদকে জানাতে চাইছিলাম। আপনারা দেখেছেন প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত সফল আমেরিকা সফর হয়েছে। দেখে আমার খুবই খারাপ লেগেছে যে, বিরোধীরা কিছু শুনতেই রাজি নন। মনে হচ্ছে ওঁরা দেশের যে কোনও কৃতিত্বে কালি লেপতে পারলেই খুশি। বিদেশনীতি এমন একটি ক্ষেত্র যেখানে সাধারণত সবাই একসঙ্গে এগোয়। আমরা দেশের ভিতরে তর্ক করতেই পারি, কিন্তু দেশের বাইরে সব সময় এক। আজ বিরোধীদের আচরণ খেয়াল করার মতো। জাতীয় স্বার্থের বিষয় উঠলে রাজনীতি সরিয়ে তা গ্রহণ করা উচিত।”
বিরোধীদের অবশ্য বক্তব্য, মণিপুর থেকে নজর ঘোরানোর জন্য মোদী সরকার দীর্ঘ তিরিশ মিনিট ধরে পড়া জয়শঙ্করের বিবৃতিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছে। তৃণমূল নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন টুইট করে বলেন, ‘আজ সংসদে নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রী বিদেশনীতি নিয়ে আধ ঘণ্টা বিবৃতি পড়লেন। সরকারের অগ্রাধিকার কোথায় তা স্পষ্ট। মোদীর কাছে মণিপুরের মানুষের দুর্দশার তুলনায় পর্যটন বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’ আপ-এর রাজ্যসভার সাংসদ রাঘব চাড্ডাও ব্যঙ্গ করে বলেছেন, “বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতির নামে ৩০ মিনিট কাটালেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরের সূচি জানালেন। তবে সেখানকার খাবারের তালিকাটি দেননি, সেটা খুবই দুঃখের।এত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কী করে ভুলে গেলেন তিনি?”