এস জয়শঙ্কর। —ফাইল চিত্র।
ব্রিটেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের গত বছরের দেওয়া দীপাবলির সময়সীমা পেরিয়ে গিয়ে পরের দীপাবলিএসে গিয়েছে। তার ঠিক মুখে আজ পাঁচ দিনের সরকারি সফরে ব্রিটেন সফরে গেলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। কূটনৈতিক মহলের প্রশ্ন, ভারত-ব্রিটেন মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি কবে হবে? জয়শঙ্করের সফরে মুক্ত বাণিজ্যচুক্তির প্রশ্নে জট কিছুটা খুলবে কি না, সেদিকে তাকিয়ে সংশ্লিষ্ট মহল।
বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে এই সফর ঘোষণার পরে বলা হয়েছে, ‘‘ভারত এবং ব্রিটেনের মধ্যে দ্বিপক্ষিক সম্পর্ক ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে। তৈরি হয়েছে ২০৩০ পর্যন্ত ভারত ও ব্রিটেনের মধ্যে রোডম্যাপ। দু'দেশের এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে নতুন মাত্রা দেবে জয়শঙ্করের সফর। তিনি বৈঠক করবেন সে দেশের বিদেশসচিব জেমস ক্লেভারলি-র সঙ্গে। সুনক সরকারের অন্য আধিকারিকদের সঙ্গেও তাঁর কথা হবে।’’
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই জাপান, কোরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মতো ১৩টি দেশ বা গোষ্ঠীর সঙ্গে অবাধ বাণিজ্য চুক্তি করেছে ভারত। তার বাইরে ব্রিটেনের মতো ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, কানাডা, আমেরিকা ছাড়াও দক্ষিণ আমেরিকার বেশ কয়েকটি দেশের গোষ্ঠী-সহ বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কথা চালাচ্ছে কেন্দ্র।
তবে ব্রিটেনের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি রূপায়ণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা ‘ডেটা লোকালাইজেশন’ সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে। অর্থাৎ ভারত চায়, এ দেশে বাণিজ্য করতে আসা ব্রিটিশ সংস্থাগুলি এখানকার পরিষেবাজাত তথ্য যেন নিজেদের ঘরে না নিয়ে নেয়। বিষয়টির নিরাপত্তাগত দিক রয়েছে। তা ছাড়া, ভারতীয় বাজার এবং উপভোক্তা সংক্রান্ত বিপুল তথ্য বিদেশে চলে যাক, এটা চায় না নয়াদিল্লি। সে ক্ষেত্রে ভারতের দাবি, ব্রিটিশ সংস্থাগুলিকে ভারতের জন্য নির্দিষ্ট স্থানীয় সার্ভার তৈরি করতে হবে, যা কি না ব্যয়বহুল।
ঋষি সুনক ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর গত এক বছর ধরে এই নিয়ে দরকষাকষি চলছে। জয়শঙ্করের এই সফর তার অঙ্গ হিসাবেই মনে করা হচ্ছে। ব্রিটেন চাইছে, ভারতের সরকারি বরাতের ক্ষেত্রেও তাদের সংস্থাগুলি যেন দরপত্র দিতে পারে। এটাও চুক্তি রূপায়ণের ক্ষেত্রে একটি জট। আবার ভারতও ব্রিটেনের বাজারের আরও বেশি নাগাল পেতে চাইছে। নয়াদিল্লি এ কথা স্পষ্ট করে দিয়েছে, ব্রিটেন স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে ভারতীয় পরিষেবার প্রবেশের পথ আরও প্রশস্ত করলে তবেই তারা ব্রিটেনের হুইস্কি আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক ছাড় দেবে।