বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।—ছবি পিটিআই
রেডিয়োয় নরেন্দ্র মোদীর ‘মন কি বাত’-এর মতো রাহুল গাঁধী নিজের মনের কথা বলতে ‘পডকাস্ট’ শুরু করবেন বলে ভাবনাচিন্তা করছিলেন। কিন্তু মত বদলে ছোট ছোট ভিডিয়োয় তাঁর মতামত জানাতে শুরু করলেন।
শনিবার তার প্রথম পর্বে আচমকা চিন কেন আগ্রাসী হয়ে উঠল, তা বলতে গিয়ে মোদী সরকারের বিদেশ নীতিকে নিশানা করলেন রাহুল। তাঁর দাবি, মোদী জমানার ছ’বছরে বিদেশ নীতিতে সমস্যা, বিশেষত প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্কে অবনতি এবং অর্থনীতির দুরবস্থাই লাদাখে চিনের আগ্রাসী হয়ে ওঠার অন্যতম কারণ।
রাহুলের এই সাড়ে তিন মিনিটের ভিডিয়ো নিয়ে রাজনৈতিক স্তরে বিতর্ক হয়েছে। মোদী সরকারের নীতি ও ভূমিকা নিয়ে কংগ্রেস এ দিন আরও চারটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে। তবে দিনের শুরুতে প্রকাশ করা রাহুলের ভিডিয়োটি জবাব দিয়েছেন খোদ বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ধরে ধরে রাহুলের প্রতিটি অভিযোগের জবাব দিয়েছেন তিনি। পাল্টা তিরও ছুড়েছেন। পাশাপাশি এই ভিডিয়োয় রাহুলের চেহারা, লম্বা চুল নিয়েও সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চা হয়েছে। অনেকেরই মনে হয়েছে, রাহুলকে একটু রোগা বা অসুস্থ দেখিয়েছে।
রাহুল আজ অভিযোগ তুলেছেন, ২০১৪ থেকেই মোদী একের পর এক ‘ব্লান্ডার’ করেছেন। দেশের সুরক্ষা নির্ভর করে তার বিদেশ নীতি, প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্ক ও অর্থনীতির উপরে। গত ছ’বছরে এর প্রতিটি ক্ষেত্রে ধাক্কা লেগেছে। এখন আমেরিকা, ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্ক লেনদেনের। রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ। এত দিন পাকিস্তান বাদে নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা— সব প্রতিবেশীই বন্ধু ছিল। এখন নেপাল ক্ষুব্ধ। শ্রীলঙ্কা নিজের বন্দর চিনকে দিয়ে দিচ্ছে।
রাহুলের জবাবে আসরে নেমে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর দশটি টুইট করেন। প্রথম ন’টিতে রাহুলকে পাল্টা জবাব। দশম টুইটে পাকিস্তানের প্রসঙ্গ টেনে জয়শঙ্কর মোদী সরকারের বালাকোট-উরির পাল্টা হানার সঙ্গে মনমোহন সরকারের শর্ম-আল-শেখ, ২৬/১১-র তুলনা টানেন। জয়শঙ্কর বোঝাতে চেয়েছেন, মোদী সরকার যেমন পাকিস্তানের হামলার জবাবে পাল্টা বালাকোট-উরিতে হামলা চালিয়েছে, মনমোহন জমানায় ২৬/১১-র জবাবে তার কিছুই হয়নি। বরং শর্ম-আল-শেখ ভারত-পাকিস্তান যৌথ বিবৃতিতে বালুচিস্তানের সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ মেনে নিয়ে ভারত নিজের অবস্থান দুর্বল করেছিল।
জয়শঙ্করের দাবি, আমেরিকা, রাশিয়া, ইউরোপ, জাপানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক এখন অনেক মজবুত। চিনের সঙ্গে ভারত সমানে সমানে কথা বলে। চিন-পাকিস্তান আর্থিক করিডর, চিনের সড়ক, দক্ষিণ চিন সাগর, সন্ত্রাসবাদীদের রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ভারত এখন অনেক স্পষ্ট কথা বলে। মলদ্বীপের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নতি হয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত চুক্তি হয়েছে। ভুটান ও আফগানিস্তানের সঙ্গেও সম্পর্কের উন্নতির উদাহরণ দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী।