বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ছবি: পিটিআই।
মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে প্রবল চাপ তৈরি হচ্ছে কেন্দ্রের উপরে। সক্রিয়তা দেখাতে আসরে নামলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সম্প্রতি মায়ানমারের ‘স্টেট পিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল’-এর প্রধান থান সুই-এর সঙ্গে আলোচনায় সীমান্তের অশান্তি নিয়ে সরব হয়েছেন বিদেশমন্ত্রী। তিনি থান সুইকে বলেছেন, মণিপুরের পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ এবং তা আরও বাড়ে, এমন কোনও পদক্ষেপ যেন মায়ানমার না করে। বিদেশমন্ত্রীর কথায়, “ভারত মায়ানমারের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফেরার চেষ্টাকে সমর্থন করছে। সে ক্ষেত্রে শান্তি-নিরাপত্তা ফেরানোর দিকটিকেও গুরুত্ব দিতে চায় নয়াদিল্লি। এ ব্যাপারে আমরা আমাদের নীতির সঙ্গে ‘আসিয়ান’-এর নীতির সমন্বয় করব।”
সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, মণিপুর-সহ উত্তর-পূর্ব ভারতে জঙ্গিদের সাহায্য করেছিল মায়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। পরে এলাকায় লাগাতার অভিযানের ফলে তারা অনেকটাই পিছু হটে। একটি বড় অংশ মূল স্রোতে ফিরেছেও। কিন্তু এখনও যারা আছে, তারা আবার সঙ্ঘবদ্ধ হতে চাইছে। এরা মণিপুরের অশান্তিতে ফের ইন্ধন দিয়ে মায়ানমারে সেনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মণিপুরের বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির সাহায্য পেতে চাইছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর আগে নাগা ও কুকিদের সংঘর্ষ হয়েছিল। তা ছড়িয়েছিল মণিপুরেও। কুকি ন্যাশনাল আর্মি, কুকি ন্যাশনাল ফ্রন্ট, ইউনাইটেড কুকি লিবারেশন ফ্রন্ট-সহ বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন তৈরি হয় সেই সময়ে।
মণিপুরের কুকি এলাকায় মায়ানমারের মাফিয়াদের মদতে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে আফিম ও গাঁজার চাষ। দেশের হেরোইন-স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে মণিপুর। সীমান্তবর্তী গ্রামগুলির ঘরে-ঘরে মাদক তৈরির কারখানা। যত মাদক, তত টাকা! গ্রামের মানুষ ফসলের চাষ বন্ধ করে আফিম চাষ করছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, মাদক ব্যবসায়ীরা সব সময়ে অস্থির রাজনৈতিক অবস্থা ও দারিদ্রের সুযোগ নেয়। মায়ানমার-চট্টগ্রাম সীমান্ত জুড়ে মাদক তৈরি এখন সুসংগঠিত শিল্প। মণিপুরে কুকিদের ব্যবহার করে সেই কারবারই ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। মায়ানমার ও মিজোরাম থেকে কুকিরা নাগাড়ে মণিপুরে ঢুকছেন। তাঁদের আফিম চাষের পাশাপাশি উন্নত আগ্নেয়াস্ত্র দিয়েও মদত করছে মায়ানমারের ও-পারে থাকা চিনা এজেন্টরা।