লোকসভায় বক্ততা সুদীপের। ছবি: সংসদ টিভি থেকে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে ফিরে আসা বাংলার ডাক্তারি পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নিয়ে লোকসভায় উদ্বেগ প্রকাশ করলেন তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠি লিখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জানিয়েছিলেন ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়াদের রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে সুযোগ দিতে চান তিনি। এ বিষয়ে সর্বভারতীয় নিয়ামক সংস্থা ‘ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন’ (এনএমসি) যাতে প্রয়োজনীয় অনুমোদন দেয়, তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছিলেন মমতা। কিন্তু এখনও সেই প্রশ্নের ‘নির্দিষ্ট উত্তর’ মেলেনি বলেই অভিযোগ সুদীপের।
বুধবার সুদীপ বলেন, ‘‘আমি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি প্রধানমন্ত্রীকে পৌঁছে দিয়েছিলাম। তাতে ইউক্রেন থেকে ফিরে আসা পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ৩৫০ জন মেডিক্যাল পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ জানতে চাওয়া হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তিনি রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ওই পড়ুয়াদের সুযোগ দিতে চান।’’
বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ আলোচনা হয়েছিল বলে সুদীপের দাবি। তিনি জানিয়েছেন, সেই সময় প্রধানমন্ত্রী তাঁকে বলেন, ‘‘ওই পড়ুয়াদের হাঙ্গেরিতে পাঠানো হবে।’’ চেক প্রজাতন্ত্র, রোমানিয়ার মতো পূর্ব ইউরোপের দেশগুলিতেও তাদের পাঠানো হতে পারে। সুদীপের দাবি, ওই আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁকে জানিয়েছিলেন, ইউক্রেন ওই মেডিক্যাল পড়ুয়াদের ফেরত নিয়ে রাজি রয়েছে। এর পরেই তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এখন ইউক্রেনের অস্তিত্ব কী? ইউক্রেন কী এখন রাশিয়ার অধীনস্থ অঞ্চল?’’ এই পরিস্থিতিতে বাংলার ডাক্তারি পড়ুয়াদের বিশ্বের কোন প্রান্তে পাঠ্যক্রম শেষ করার সুযোগ করে দেওয়া হবে, সে বিষয়ে কেন্দ্রের ‘সুনির্দিষ্ট জবাব’ চেয়েছেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা।
প্রসঙ্গত, যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে প্রায় ১৮ হাজার ভারতীয় ডাক্তারি পড়ুয়া ফিরে এসেছেন। ইউক্রেনে যাঁরা ইন্টার্নশিপের অপেক্ষায় ছিলেন, অর্থাৎ ১২ নম্বর সিমেস্টার চলছিল তাঁদের জন্য ইতিমধ্যেই এনএমসি বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তা হল ইন্টার্নশিপ পর্বে পৌঁছনো পড়ুয়ারা ‘ফরেন মেডিক্যাল গ্র্যাজুয়েট এগ্জামিনেশন’ (এফএমজিই) পাশ করে এ দেশে ইন্টার্নশিপ শেষ করে ভারতে প্র্যাক্টিস করতে পারবেন।
মার্চ মাসে মোদীকে চিঠিতে মমতা লিখেছিলেন, ‘এখনও পর্যন্ত ইউক্রেন থেকে পশ্চিমবঙ্গে মোট ৩৯১ জন মেডিক্যাল পড়ুয়া ফিরে এসেছেন। নিজেদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে প্রচণ্ড মানসিক উদ্বেগে রয়েছেন তাঁরা।’ সেই সময় ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে ইউক্রেন ফেরত ডাক্তারি পড়ুয়াদের সঙ্গে কথাও বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।