আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। ফাইল চিত্র।
ভারতে ‘ধর্মভিত্তিক জনবিন্যাসের বদল’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবত। সেই সঙ্গে আফ্রিকার দক্ষিণ সুদান, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পূর্ব-তিমোর এবং ইউরোপের কসোভোর উদাহরণ টেনে ভবিষ্যতে ‘দেশ ভাঙার সম্ভাবনার’ দিকে ইঙ্গিত করে ধর্মের ভিত্তিতে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের পক্ষেও সওয়াল করলেন তিনি।
ভাগবত বুধবার নাগপুরে সঙ্ঘের দশেরা উৎসব কর্মসূচিতে বলেন, ‘‘ভারতে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি সরকারি নীতির প্রয়োজন। ধর্মভিত্তিক জনবিন্যাস নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না করা হলে ভবিষ্যতে দেশ ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়তে পারে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি, ধর্মের ভিত্তিতে জনসংখ্যার ভারসাম্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা উপেক্ষা করা যায় না।’’
‘ধর্মভিত্তিক জনবিন্যাসের বদলের’ কারণেই সুদান ভেঙে দক্ষিণ সুদান, সার্বিয়া ভেঙে কসোভো এবং ইন্দোনেশিয়া ভেঙে পূর্ব তিমোরের মতো নতুন দেশ গঠিত হয়েছে বলেও বক্তৃতায় মনে করিয়ে দিয়েছেন ভাগবত। প্রসঙ্গত, ইসলামি রাষ্ট্র সুদানের অ-ইসলামি জনজাতি প্রধান অঞ্চল নিয়ে ২০১১ সালে গঠিত হয়েছিল দক্ষিণ সুদান। ২০০৮ সালে খ্রিস্টানপ্রধান সার্বিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয় মুসলিম প্রধান কসোভো। ২০০২ সালে ইসলামি রাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া থেকে আলাদা হয়ে নতুন রাষ্ট্র হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে খ্রিস্টানপ্রধান পূর্ব তিমোর।
সরাসরি নাম না করলেও সরসঙ্ঘচালক সুদর্শন তাঁর বক্তৃতায় দেশে মুসলিম ও খ্রিস্টানদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। এ প্রসঙ্গে ২০১৫ সালে আরএসএস অখিল ভারতীয় কার্যকরী মণ্ডল (এবিকেএম)-তে গৃহীত একটি প্রস্তাবের প্রসঙ্গও তুলেছেন তাঁরা। ২০১১ সালের জনগণনার পরিসংখ্যান তুলে ধরে ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, ‘মূল ভারতীয় ধর্মাবলম্বীদের জনসংখ্যা ৮৮ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৮৩.৮ শতাংশে। মুসলিমদের জনসংখ্যার হার ৯.৮ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৪.২৩ শতাংশ।’
গত বছর আরএসএসের প্রতিষ্ঠা দিবসের বক্তৃতায় সেই প্রসঙ্গ তুলে ভাগবত বলেছিলেন, ‘‘এ দেশের নিজস্ব ধর্মের মানুষদের জনসংখ্যা ৮১.৩ শতাংশ থেকে কমে ৬৭ শতাংশে নেমে এসেছে গত ২০০১ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে। অন্য দিকে, ওই দশকে খ্রিস্টানদের জনসংখ্যা বেড়েছে ১৩ শতাংশ। মণিপুরে মূল ভারতীয় ধর্মের জনসংখ্যা ৮০ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশে।’’