পশুখাদ্য মামলায় নতুন তথ্য। ছবি: পিটিআই
মোষের শিং পালিশ করার জন্য ৬ বছরে ব্যবহার করা হয়েছিল প্রায় ৫০ হাজার লিটার সর্ষের তেল! আর তার জন্য বিহার সরকারকে গুনতে হয়েছিল ১৬ লক্ষ টাকা! আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ের পশুখাদ্য মামলা নিয়ে এমনই চমকপ্রদ তথ্য উঠে এল রাজ্যের বিধানসভায়। বিধানসভার বাদল অধিবেশনে এক্সেস এক্সপেন্ডিচার অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন বিল- ২০১৯ নিয়ে আলোচনার সময় এই তথ্য তুলে ধরেছেন রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদী।
বিলের সূত্র ধরেই, কীভাবে সরকারি অর্থ অপচয় করা হয়, তা নিয়ে আলোচনা ওঠে বিধানসভায়। তাতে স্বাভাবিক ভাবেই ১৯৭৭-৭৮ সাল থেকে ২০১৫-১৬ সাল পর্যন্ত বিস্তৃত সময়ের কথাও উঠে আসে। উঠে আসে পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির কথাও। ওই কেলেঙ্কারিতে নানা ‘চমকপ্রদ’ উপায়ে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছিল বিহারের পশুপালন দফতরের টাকা। সে সম্পর্কে বলতে গিয়েই কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরেন সুশীল মোদী।
১৯৯০-৯১ সাল থেকে ১৯৯৫-৯৬ পর্যন্ত সময়ে মোট ৪৯ হাজার ৯৫০ লিটার সর্ষের তেল কেনা হয়েছিল। কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, মোষের শিং পালিশের জন্যই ওই তেল কেনা হয়েছিল। সে সময় হটওয়ার্ক মিল্ক সাপ্লাই কাম ডেয়ারি ফার্মের ম্যানেজার জ্যানুয়েল ভেঙ্গরাজ ভুয়ো বিল দেখিয়ে ওই টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন। দুর্নীতিতে অনেক আমলা ও রাজনৈতিক নেতারাও জড়িত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ৪৪২ টাকায় কলা বেচে ২৫ হাজার টাকা জরিমানার মুখে পাঁচ তারা হোটেল
অবিভক্ত বিহারের রাঁচি, চাইবাসা, দুমকা, জামশেদপুর, গুমলা ও পটনা জেলায় ৯৫৯টি ভেড়া, ৫ হাজার ৬৬৪ টি শূকর, ৪০ হাজার ৫০৪ টি মুরগি ও ১ হাজার ৫৭৭টি ছাগলের জন্য কেনা হয়েছিল ২৫৩.৩৩ কোটি টাকার পশুখাদ্য। অথচ, প্রয়োজন ছিল মাত্র ১০.৫৩ কোটি টাকার খাবার। সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী, দুধ ও মাংস পাওয়া যায় এমন প্রাণীদের খাবারে ১০% হলুদ ভুট্টা মেশানোর দরকার ছিল। আর তার খরচ দেখানো হয়েছে ১৫৪.৭২ কোটি টাকা। ওই টাকায় প্রয়োজনের তুলনায় ১১৫% বেশি হলুদ ভুট্টা কেনা যেত। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, পশুখাদ্যে ১৫% আমন্ড খোল মেশানোর কথা। তার খরচ দেখানো হয়েছে ৭.৬৯ কোটি টাকা। এই টাকায় প্রয়োজনের থেকে ৩৩ গুণ বেশি আমন্ড খোল কেনা যেত।
পশুখাদ্য মামলায় এমন তথ্য অবশ্য নতুন কিছু নয়। দুর্নীতির নানা পথ দেখে সেসময় চোখ কপালে তুলেছিলেন অনেকেই। কাগজে কলমে গবাদি পশু বা কৃষকদের যে সংখ্যা দেখানো হয়েছিল বাস্তবে তার কোনও অস্তিত্বই ছিল না। আটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে ওই দুর্নীতির দায়ে এখনও অবধি কারদণ্ড ভোগ করছেন অবিভক্ত বিহারের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব।
আরও পড়ুন: অনলাইনে বিজেপির ‘সদস্য’ হলেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান!