গত দু-তিন মাস ধরে এই এইচ৩এন২ ভাইরাসের দাপট বেশ বেড়েছে। প্রতীকী ছবি।
দীর্ঘ দিন ধরে চলছে কাশি। অনেক সময়েই তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আসছে জ্বরও— দেশ জুড়ে বহু সংখ্যক মানুষের মধ্যেই সম্প্রতি এই ধরনের উপসর্গের বাড়বাড়ন্ত দেখা যাচ্ছে বলে শনিবার জানাল ‘দ্য ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ’ বা আইসিএমআর। এক বিবৃতিতে এ দিন সংস্থাটি জানিয়েছে, এর নেপথ্যে রয়েছে ‘ইনফ্লুয়েঞ্জা এ’ ভাইরাসের এক ধরনের সাবটাইপ ‘এইচ৩এন২’।
আইসিএমআর বিবৃতি অনুযায়ী, গত দু-তিন মাস ধরে এই এইচ৩এন২ ভাইরাসের দাপট বেশ বেড়েছে। তবে উদ্বেগের বিষয় হল, ইনফ্লুয়েঞ্জার অন্যান্য ধরনের থেকে এই ধরনটি হাসপাতালে ভর্তি করানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি করে সবচেয়ে বেশি। যদিও জীবনের সঙ্কট আসতে পারে এমন কোনও পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার নজির এখনও পাওয়া যায়নি এই ভাইরাসের কারণে। কিন্তু অনেক সময়ে কোভিডের উপসর্গের সঙ্গে এর উপসর্গ মিলে যাওয়ায় আতঙ্ক সৃষ্টি হচ্ছে। তবে এমন পরিস্থিতি তৈরি হলেও ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই বলেই আশ্বাস চিকিৎসকদের। কারণ এখনও পর্যন্ত এই ধরনের উপসর্গ যাঁদের মধ্যে দেখা দিয়েছে, তাঁদের সকলেরই কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।
এই ভাইরাস থেকে সুরক্ষার জন্য উপদেশের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে আইসিএমআর। যার মধ্যে বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার কথা বলা হয়েছে সবার আগে। কোনও রকম উপসর্গ দেখা দিলেই মাস্ক ব্যবহার শুরু করা এবং ভিড়ে ঠাসা জায়গা এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে। নাকে-মুখে হাত দেওয়া থেকেও বিরত থাকতে হবে। হাঁচি বা কাশির সময়ে নাক এবং মুখ ঢেকে নেওয়া প্রয়োজন। তা ছাড়া, জল এবং জলীয় আহারের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে তৎক্ষণাৎ। গা ব্যাথা বা জ্বরের ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল নেওয়া যেতে পারে।
যেগুলো করা যাবে না, তার মধ্যে সবার আগে রয়েছে করমর্দন বা অন্য কোনও রকমের অভিবাদন যাতে একে অপরের শরীরের সংস্পর্শে আসতে হয়। প্রকাশ্যে থুতু ফেলা নিষিদ্ধ। একসঙ্গে অনেকজন মিলে কাছাকাছি বসে খাওয়াও বারণ। তা ছাড়া, নিজে থেকে ওষুধ খাওয়া বাড়তি বিপদ ডেকে আনতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে। এমনকি, অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স শুরু এবং শেষ, দু’টোই করতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই।
অন্য দিকে, অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগের প্রসঙ্গে চিকিৎসকদের জন্য এ দিন এক বিশেষ নির্দেশিকা জারি করেছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)। আইএমএ জানিয়েছে, অ্যান্টিবায়োটিক লিখে দেওয়ার আগে সংক্রমণটি আদৌ ব্যাক্টেরিয়াল কি না, তা যেন ভাল করে যাচাই করে নেন চিকিৎসকেরা। সম্প্রতি ইনফ্লুয়েঞ্জার কারণে যে জ্বর, কাশি, গলা ব্যাথা এবং গা ব্যাথার উপসর্গগুলি দেখা যাচ্ছে, তার নেপথ্যে মূলত রয়েছে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস। ফলে এর চিকিৎসার জন্য অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন নেই বলেই জানিয়েছে আইএমএ।