‘ডিজিটাল গ্রেফতার’-এর ফাঁদ পেতে দিল্লির বৃদ্ধের থেকে আদায় করা হয়েছে ১০ কোটি টাকা। —প্রতীকী চিত্র।
প্রতারণার জালে দিল্লির অবসরপ্রাপ্ত এক ইঞ্জিনিয়ার। অভিযোগ, রোহিণীর বাড়িতে ৭২ বছরের বৃদ্ধকে আট ঘণ্টা ধরে বসিয়ে রাখা হয়। ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’-এর ফাঁদ পেতে তাঁর থেকে আদায় করা হয় ১০ কোটি টাকা। বৃদ্ধের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে দিল্লি পুলিশের সাইবার দমন শাখা। এখনও পর্যন্ত তারা ৬০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, বৃদ্ধের টাকা হাতিয়ে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকেই টাকা উদ্ধারের কাজ চলছে।
অক্টোবরের শুরুতে পুলিশের দ্বারস্থ হয় বৃদ্ধের পরিবার। অভিযোগকারী একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। কয়েক বছর আগে অবসর নিয়েছেন। এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, বিদেশে বসে অভিযুক্ত বৃদ্ধকে প্রতারণা করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। অভিযুক্তের কিছু সহযোগী ভারতে রয়েছেন। তাঁরাই ওই বৃদ্ধের বিষয়ে সমস্ত তথ্য জোগাড় করেছেন। থানায় বৃদ্ধ যে অভিযোগ করেছেন, তা থেকে জানা গিয়েছে, তাঁর কাছে একটি ফোন এসেছিল। সেই ফোনে বলা হয়, তাইওয়ান থেকে তাঁর জন্য একটি জিনিস এসেছে, যা মুম্বই বিমানবন্দরে আটক করা হয়েছে। আটক করা ওই জিনিসের উপর বৃদ্ধের নামও লেখা রয়েছে। ওই ব্যক্তি আরও দাবি করেন, তাইওয়ান থেকে আসা ওই পার্সেলে রয়েছে নিষিদ্ধ মাদক। সে কারণে বিমানবন্দরে আটকানো হয়েছে জিনিসটি। সেই বিষয়ে মুম্বই পুলিশ বৃদ্ধের সঙ্গে কথা বলতে চান। এই কথাবার্তা বলার জন্য স্কাইপ ডাউনলোড করতে বলা হয় বৃদ্ধকে।
তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে প্রায় আট ঘণ্টা বাড়িতে বসিয়ে রাখা হয় বৃদ্ধকে। তাঁকে ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ দেখিয়ে তাঁর থেকে ১০ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়। ওই টাকা একাধিক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করতে বলা হয়। টাকা ট্রান্সফারের পরে নিজের পরিবারকে বিষয়টি জানান বৃদ্ধ। বৃদ্ধের ছেলে থাকেন দুবাইয়ে, মেয়ে থাকেন সিঙ্গাপুরে। তাঁদের থেকেও টাকা হাতানো হবে বলে বৃদ্ধকে হুঁশিয়ারি দেন অভিযুক্ত। এর পরেই তাঁর পরিবার থানার দ্বারস্থ হয়।
গত মাসে এই ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে দেশে ৭ লাখ ৪০ হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে। ওই সময়ে প্রায় ১২০ কোটি টাকার প্রতারণা হয়েছে।