জলসঙ্কট প্রকট বেঙ্গালুরুতে। ট্যাঙ্কার থেকে জল ভরতে ব্যস্ত বাসিন্দারা। ছবি: পিটিআই।
বাড়িতে রান্নার বদলে হোটেল থেকে খাবার আনাচ্ছেন। কাগজের কাপ, প্লেটে খাচ্ছেন। বাড়ির বদলে শপিং মলের শৌচালয় ব্যবহার করছেন। এক দিন অন্তর এক দিন স্নান করছেন। জল বাঁচাতে এ ভাবেই একের পর এক নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করছেন বেঙ্গালুরুবাসী। জলসঙ্কট বৃদ্ধি পাচ্ছে দিন দিন। এই পরিস্থিতিতে জল বাঁচাতে নিত্যনতুন পদ্ধতি অবলম্বন করছেন বেঙ্গালুরুবাসী।
ভারতের ‘সিলিকন ভ্যালি’-র অভিজাত আবাসনের বাসিন্দারাও বিপাকে। সেখানে বৃষ্টি জল ধরে ব্যবহারের ব্যবস্থা থাকলেও তা দিয়ে কাজ চলছে না। জল সরবরাহকারী ট্যাঙ্কারের উপরেই ভরসা করতে হচ্ছে তাঁদের। ট্যাঙ্কার থেকে জল ভরে লিফ্টে করে জল তুলতে হচ্ছে বহুতলে। জলসঙ্কটের প্রভাব পড়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও। শহরের একটি কোচিং সেন্টার ইতিমধ্যে অনলাইনে পড়ানো শুরু করেছে। পড়ুয়াদের জানিয়েছে, ‘জরুরি অবস্থা’-র কারণে এই ব্যবস্থা। বান্নেরঘাটা রোডের একটি স্কুলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাদের তরফে পড়ুয়াদের জানানো হয়েছে, অনলাইনে ক্লাস নেওয়া হবে, যেমন অতিমারির সময় হয়েছে।
তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে রোজ স্নান না করে থাকা অসম্ভব হয়ে উঠছে। কেআর পুরমের বাসিন্দা সুজাতা জানিয়েছেন, এখন যা পরিস্থিতি, তাতে এক দিন অন্তর এক দিন স্নান করতে বাধ্য হচ্ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ওই সামান্য জল দিয়ে কী করব? জামাকাপড় কাচব, না কি বাসন ধোবো, না রান্না করব? বাসন যাতে ধুতে না হয়, তাই কাগজের প্লেট, গ্লাস ব্যবহার করছি। সপ্তাহে দু’দিন রেস্তরাঁ থেকে অর্ডার করে খাচ্ছি। সপ্তাহে এক দিন মাত্র ওয়াশিং মেশিন চালাতে পারি।’’
শহরের অনেক বাসিন্দাই শপিং মলে গিয়ে শৌচালয় ব্যবহার করছেন। অনেকে আবার দফতর থেকে বাড়িতে বসে কাজের অনুমতি চেয়ে শহর ছেড়েছেন। সে রকমই এক জন লক্ষ্মী ভি। তিনি একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কাজ করেন। থাকেন সিঙ্গসান্দ্রায়। আদতে তিনি তামিলনাড়ুর তিরুচিরাপল্লির বাসিন্দা। অফিস থেকে বাড়ি বসে কাজের অনুমতি নিয়ে চলে গিয়েছেন তিরুচিরাপল্লির বাড়িতে।
বেঙ্গালুরুতে প্রতি দিন ২৬০ কোটি থেকে ২৮০ কোটি লিটার জলের প্রয়োজন হয়। এখন তার অর্ধেক জল মিলছে। শহরে জলের উৎস কাবেরী নদী এবং ভূগর্ভস্থ জল। নিত্য ব্যবহারের জল শোধন করে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলা হয়। সম্প্রতি বৃষ্টি না হওয়ায় সেই জলের উৎসে টান পড়েছে। সেই নিয়ে শাসক কংগ্রেস এবং বিরোধী বিজেপি একে অন্যের দিকে আঙুল তুলছে।