ফাইল চিত্র।
গত তিন বছর ধরে বিশ্বে দাপাচ্ছে করোনা। রোজগার হারিয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। নিজের পেশায় কাজ না পেয়ে আয়ের অন্য উপায় খুঁজেছেন অনেকে। এই সময়ে ভারতে অতিমারি পরিস্থিতিতে শিক্ষার হালহকিকত জানতে গিয়ে প্রকাশ্যে এল একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য। এবং সেটাও পাওয়া গেল সরকারি রিপোর্টেই।
তাতে দেখা যাচ্ছে, কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতিতে দেশের বেসরকারি স্কুলগুলিতে ভর্তির সংখ্যা কমেছে। একই সময়ে সরকারি স্কুলগুলিতে নতুন পড়ুয়াদের সংখ্যা বেড়েছে। এর নেপথ্যে রয়েছে পরিবারের আয় কমে যাওয়া।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে দেশের সরকারি স্কুলে পড়ুয়াদের সংখ্যা ছিল ১৩ কোটি ১০ লক্ষ। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে তা তিন শতাংশ বেড়ে হয় ১৩ কোটি ১৫ লক্ষ। অন্য দিকে, ওই সময়ের মধ্যে বেসরকারি স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা কমেছে প্রায় ১০ লক্ষ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর কারণ একটাই— পারিবারিক আয় কমে যাওয়া। অতিমারিতে সিংহভাগ মানুষের আয় কমেছে। যাঁরা অর্থনৈতিক ভাবে কিছুটা পিছিয়ে ছিলেন তাঁদের অবস্থা আরও সঙ্গিন হয়েছে লকডাউনের পর। এর আঁচ পড়েছে শিক্ষাক্ষেত্রেও। যে সব বেসরকারি স্কুলের ফি তুলনামূলক ভাবে কম, সে সব স্কুলে আয় বেশি কমেছে। শিক্ষকরাও ছাঁটাই হয়েছেন।
তথ্য বলছে, অতিমারি করোনার আগে পরিস্থিতিটা ছিল অন্যরকম। ২০১৩-’১৪ থেকে ২০১৯-’২০ পর্যন্ত সরকারি স্কুলে পড়ুয়াদের সংখ্যা কমেছিল প্রায় দেড় কোটি। একই সময়ে বেসরকারি স্কুলে ১০ কোটি পড়ুয়া নতুন করে ভর্তি হয়। এমনটাই জানা গিয়েছে, সরকারের ‘ইউনিফায়েড ডিস্ট্রিক্ট ইনফর্মেশন সিস্টেম ফর এডুকেশন’ বা ইউডিআইএসই-র মাধ্যমে।
রাজ্যভিত্তিক তথ্য বলছে, দেশের ১৮টি বড় রাজ্যে সরকারি স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। যেমন, অন্ধ্রপ্রদেশের সরকারি স্কুলে ১৪ শতাংশ পড়ুয়া বেড়েছে। কিন্তু ১৩ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী কমেছে বেসরকারি স্কুলে। তবে এর ব্যতিক্রমও রয়েছে। যেমন, করোনা পরবর্তী সময়ে ওড়িশায় সরকারি স্কুলে ৫ শতাংশ পড়ুয়া কমেছে। বেসরকারি স্কুলে নতুন পড়ুয়া বেড়েছে ৯ শতাংশ। আবার পশ্চিমবঙ্গে সরকারি এবং বেসরকারি, দু’রকম স্কুলেই নতুন পড়ুয়া বেড়েছে। তেমনই মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং উত্তরাখণ্ড— এই তিন রাজ্যে সব স্কুলেই নতুন পড়ুয়ার সংখ্যা কমেছে।