সাংসদ মহুয়া মৈত্র। —ফাইল চিত্র।
লোকসভার এথিক্স কমিটি ‘টাকা নিয়ে প্রশ্ন’ করার মামলায় তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের সাংসদপদ খারিজ করার সুপারিশ সম্বলিত রিপোর্ট লোকসভায় জমা পড়তে চলেছে আগামী সোমবার। লোকসভার সচিবালয় থেকে যে অ্যাজেন্ডা পেপার প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, এথিক্স কমিটির চেয়ারপার্সন বিনোদকুমার সোনকর প্যানেলের প্রথম রিপোর্ট জমা পড়বে।
এথিক্স কমিটি গত ৯ নভেম্বরের বৈঠকে ‘টাকা নিয়ে প্রশ্ন’ করার অভিযোগে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদের লোকসভার সদস্যপদ খারিজ করার সুপারিশ করে এই রিপোর্টটি তৈরি করে। সেই রিপোর্টই আনুষ্ঠানিক ভাবে আগামী সোমবার জমা পড়তে চলেছে সংসদের নিম্নকক্ষে। এথিক্স কমিটিতে রিপোর্টের পক্ষে মত দিয়েছিলেন ছ’জন সদস্য। তার মধ্যে ছিলেন কংগ্রেসের সাংসদ প্রীনিত কউরও। যাঁকে কংগ্রেস আগেই দল থেকে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করেছে। প্যানেলের চার জন সদস্য অবশ্য রিপোর্টের বিপক্ষে ছিলেন। বলাই বাহুল্য, তাঁরা বিরোধী দলেরই সাংসদ।
এই প্রেক্ষিতে মহুয়ার সাংসদপদ খারিজের সুপারিশ সম্বলিত রিপোর্ট লোকসভায় জমা পড়তে চলেছে। যদিও তাতেই মহুয়ার সদস্যপদ খারিজ হবে না। সেই রিপোর্টের প্রেক্ষিতে লোকসভার সদস্যরা ভোট দেবেন। যদি লোকসভার সাংসদরা রিপোর্টের পক্ষে বেশি সংখ্যক ভোট দেন, একমাত্র তাহলেই মহুয়ার সদস্যপদ খারিজ হবে। তবে বর্তমানে লোকসভায় বিজেপি তথা এনডিএর যত জন সাংসদ রয়েছেন, তার উপর নির্ভর করেই রিপোর্টের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করা ক্ষমতাসীনদের পক্ষে যথেষ্ট সহজ কাজ।
প্রাথমিক ভাবে মহুয়া প্রসঙ্গে ধীরে চলো নীতি নিলেও সম্প্রতি নেতাজি ইন্ডোরে তৃণমূলের বিশেষ অধিবেশনে সরাসরি কৃষ্ণনগরের সাংসদের পাশে দাঁড়ান দলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের সাংগঠনিক সভার মঞ্চ থেকে মমতা বলেন, ‘‘এদের (বিজেপির) প্ল্যান এখন মহুয়াকে তাড়ানো! তিন মাস আর বাকি আছে (সংসদের মেয়াদ শেষ হতে)। মহুয়া যেগুলো ভিতরে বলত, এ বার সেগুলোই বাইরে বলবে। মূর্খ না হলে ভোটের তিন মাস আগে কেউ এই কাজ করে!’’ কংগ্রেস, সিপিএম, আরজেডির মতো বিরোধী দলগুলি প্রথম থেকেই মহুয়ার পক্ষে দাঁড়িয়েছে। তাই এ বিষয়ে আলোচনায় সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে হইচই হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।