ফাইল চিত্র।
বৈবাহিক সম্পর্কে চিড় ধরার পর কোনও মহিলা যখন মঙ্গলসূত্র খুলে ফেলেন, তখন তা এক জন স্বামীকে মানসিক ভাবে পীড়া দেয়। স্বামীর পক্ষে এটা এক ধরনের ‘মানসিক নির্যাতন’। বিচ্ছেদের এক মামলায় এমনই পর্যবেক্ষণ মাদ্রাজ হাই কোর্টের।
২০১৬ সালের ১৫ জুন একটি পারিবারিক আদালতে (ফ্যামিলি কোর্ট) ইরোডের মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক সি শিবকুমার নামে এক ব্যক্তির বিচ্ছেদের আবেদন নাকচ হয়ে যায়। সেই রায় খারিজের দাবিতে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। ওই মামলায় মঙ্গলসূত্র নিয়ে এই পর্যবেক্ষণ করেছে বিচারপতি ভিএম ভেলুমনি ও এস সাউন্থারের ডিভিশন বেঞ্চ। হাই কোর্টে ওই ব্যক্তির বিচ্ছেদের আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে।
স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর গলা থেকে মঙ্গলসূত্র তিনি খুলে দেন বলে জানান স্ত্রী। যদিও তিনি দাবি করেন যে, হারটি খুলেছেন। কিন্তু মঙ্গলসূত্রের লকেটটা তাঁর কাছে রয়েছে।
মহিলার আইনজীবী হিন্দু বিবাহ আইনের সাত নম্বর ধারার কথা উল্লেখ করে জানান, মঙ্গলসূত্র পরে থাকার কোনও প্রয়োজন নেই। তাই স্ত্রী যদি মঙ্গলসূত্র খোলেন, তার কোনও প্রভাব পড়ে না বৈবাহিক সম্পর্কে। এর প্রত্যুত্তরে হাই কোর্টের বেঞ্চ বলে, বিয়ের আচার-অনুষ্ঠানে মঙ্গলসূত্র পরা অন্যতম রীতি।
এই মামলায় হাই কোর্টের অন্য এক ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের কথা তুলে ধরে বলা হয়, এক জন মহিলার গলায় থাকা মঙ্গলসূত্র একটা পবিত্র জিনিস। বৈবাহিক জীবনের প্রতীক বহন করে এটি। এক মাত্র স্বামীর মৃত্যুর পর মঙ্গলসূত্র খুলে রাখা হয়। সে কারণে কোনও মহিলা যখন এটি খুলে রাখেন, তখন সেটা এক প্রকার মানসিক নিষ্ঠুরতাকে প্রতিফলিত করে। যন্ত্রণার কারণ হতে পারে। অনুভূতিকে আঘাত করতে পারে। সেই সুরেই সুর মিলিয়েছে হাই কোর্টের বর্তমান বেঞ্চ। মঙ্গলসূত্র খুলে ফেলা ‘শিষ্টাচারহীনতার’ পরিচয় বলে মন্তব্য করেছে আদালত।