—ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার পর থেকেই ‘এক দেশ এক ভোট’-এর জন্য ক্রমাগত সওয়াল করে আসছেন নরেন্দ্র মোদী। এ বার দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র জানিয়ে দিলেন, একসঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভাগুলির ভোট করাতে নির্বাচন কমিশন সক্ষম এবং প্রস্তুত। বস্তুত, একসঙ্গে সব ভোটের ভাবনাকে ‘ভাল প্রস্তাব’ বলে সমর্থনও করেছেন তিনি। তবে জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্ত নেবে সংসদ এবং তার জন্য সংবিধান সংশোধন করাও প্রয়োজন।
এক সাক্ষাৎকারে এই প্রসঙ্গে চন্দ্র বলেন, ‘‘স্বাধীনতার পর থেকে তিন বার একসঙ্গেই সমস্ত ভোট হয়েছে। পরের দিকে কখনও বিধানসভা, কখনও সংসদ (লোকসভা) ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ফলে এই সামঞ্জস্যও আর বজায় রাখা যায়নি। এক দেশ এক ভোটের প্রস্তাবটি ভালই। তবে তার জন্য সংবিধান সংশোধন করতে হবে। কোনও বিধানসভা মেয়াদ পূর্ণ করতে না পারলে দেখতে হবে, সংবিধান মোতাবেক তা ভেঙে দেওয়া হবে, না কি একসঙ্গে ভোট করানোর জন্য সংসদের মেয়াদ বাড়াতে হবে।’’ মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের মতে, এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে সংসদকেই। মোট বিধানসভার অর্ধেকের নির্বাচন একসঙ্গে, বাকি অর্ধেকের নির্বাচন পরের বার একসঙ্গে— এ ভাবেও হয়তো বিষয়টি ভাবা যেতে পারে। তবে চূড়ান্ত যা-ই হোক, নির্বাচন কমিশন সমস্ত ভোট একসঙ্গে করাতে সক্ষম। পাঁচ বছরে মাত্র এক বার এ ভাবে ভোট করাতে তারা প্রস্তুতও।
মোদী অবশ্য শুধু লোকসভা-বিধানসভা নয়, পঞ্চায়েত-পুরসভার ভোটও একসঙ্গে পাঁচ বছরের জন্য করার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপির যুক্তি, এই প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের বিপুল খরচ সাশ্রয় হবে। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগেও সারা দেশে একটিই ভোটার তালিকা তৈরির পক্ষে প্রচার চালিয়েছিল বিজেপি। এমনকি পঞ্চায়েত স্তর থেকে লোকসভা পর্যন্ত দেশে অভিন্ন ভোটার তালিকা তৈরির বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে বৈঠকও হয়েছিল বলে সূত্রের দাবি। বিরোধীদের যদিও বক্তব্য, ‘এক দেশ এক ভোট’ হলে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলই তার ফায়দা তুলবে। তা কার্যত একদলীয় শাসনব্যবস্থার পথ খুলে দেবে। একসঙ্গে সমস্ত ভোট করানোর পরিকাঠামো নির্বাচন কমিশনের আছে কি না, তা নিয়েও বিরোধীরা সংশয় প্রকাশ করেছেন।