প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে ঐতিহাসিক বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লেখেন, “আজ অনুচ্ছেদ ৩৭০ বিলোপ নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দান করেছে তা ঐতিহাসিক। এই রায় এক নতুন আশা জাগাল। এই রায় জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখে বসবাসকারী আমাদের ভাইবোনদের উন্নতি এবং অগ্রগতির দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গিল। সব কিছুর ঊর্ধ্বে ভারতীয়দের ঐক্যের কথাই বলল আদালত।”
প্রধানমন্ত্রী আরও লেখেন, “জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখের মানুষকে আরও এক বার আশ্বস্ত করে বলতে চাই, আমি আপনাদের স্বপ্ন পূরণ করতে বদ্ধপরিকর।” প্রধানমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, উন্নয়ন এবং অগ্রগতির সুবিধা প্রান্তিক এবং দুর্বল মানুষের কাছেও পৌঁছে যাবে। যাঁরা ৩৭০ অনুচ্ছেদের জন্য ভুক্তভোগী, তাঁদের কাছেও সমস্ত সুযোগ সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার জন্য তিনি অঙ্গীকারবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী মোদী আরও বলেন, “এই রায় শুধু আইনি রায় নয়, এটি একটি আশার আলো, উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি, শক্তিশালী এবং অখণ্ড ভারত গড়ার সম্মিলিত সংকল্পের প্রমাণ।”
৩৭০ অনুচ্ছেদের বিলুপ্তি নিয়ে সোমবার রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালত জানিয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীরকে পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা দিতে হবে। রাজ্যের মর্যাদা দিয়ে জম্মু ও কাশ্মীরে ২০২৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে লাদাখ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলই থাকবে বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। শীর্ষ আদালত আরও জানায়, অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা হিসাবে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রয়োগ করা হয়েছিল কাশ্মীরে, এটি ছিল একটা সাময়িক ব্যবস্থা।
৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলুপ্তি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক্স হ্যান্ডলে জানান, এই রায়ের ফলে গরিব এবং বঞ্চিতদের অধিকার পুনরুদ্ধার হবে। বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপ, পাথর ছোড়ার মতো ঘটনা এখন থেকে অতীত হয়ে যাবে। গোটা অঞ্চলে এখন ঐক্যের সুর বাজবে। তাঁর কথায়, “জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ ছিল, এবং তা থাকবেও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে আমাদের সরকার জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখে শআন্তি ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর।”
লোকসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী এই রায় প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, বার বারই তাঁদের দাবি ছিল কবে জম্মু-কাশ্মীরকে পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হবে। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পর দ্রুত জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা দিয়ে সেখানে দ্রুত নির্বাচন করানোর ব্যবস্থা করা হোক।
কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা এনসি নেতা ওমর আবদুল্লা সুপ্রিম কোর্টের রায় শোনার পর জানান, তিনি হতাশ। তবে আশাহত হননি। ওমরের কথায়, ‘‘আমি হতাশ। তবে আশাহত নই। আমাদের লড়াই জারি থাকবে। বিজেপির এই জায়গায় পৌঁছতে বহু বছর সময় লেগেছে। আমরাও দীর্ঘ লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত।’’ ডেমোক্র্যাটিক প্রোগ্রেসিভ আজাদ পার্টি-র চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ এই রায়কে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলেছেন। তাঁর কথায়, “জম্মু-কাশ্মীরের মানুষ এই রায়ে খুশি নন। তবে আমাদের এটি মেনে নিতে হবে।”