শিনা হত্যা

জেরার মুখে রাজ্যের ২ আইপিএস

শিনা বরা খুনের ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডারের দুই উচ্চপদস্থ আইপিএস অফিসারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে মুম্বই পুলিশ। মুম্বই পুলিশ জেনেছে, ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পরেই তাঁর পরিবারের তরফে এই দুই পুলিশ অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরামর্শ চাওয়া হয়েছিল। দু’জনেই ইন্দ্রানীর পূর্ব পরিচিত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:০৭
Share:

শিনা বরা খুনের ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডারের দুই উচ্চপদস্থ আইপিএস অফিসারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে মুম্বই পুলিশ। মুম্বই পুলিশ জেনেছে, ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পরেই তাঁর পরিবারের তরফে এই দুই পুলিশ অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরামর্শ চাওয়া হয়েছিল। দু’জনেই ইন্দ্রানীর পূর্ব পরিচিত।

Advertisement

এই দুই অফিসার হলেন রঞ্জিতকুমার পচনন্দা এবং মনোজ মালবীয়। কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার পচনন্দা এখন দিল্লিতে সিআইএসএফ-এর অতিরিক্ত ডিজি (বিমানবন্দর) আর রাজ্য পুলিশের অতিরিক্ত ডিজি (অর্গানাইজেশন) পদে কাজ করছেন মনোজ।

সূত্রের খবর— ইন্দ্রাণী যখন কলকাতায় থাকতেন, সে সময়ই কলকাতার ক্লাবে এবং বিভিন্ন পার্টি বা অনুষ্ঠানে যাতায়াতের সুবাদে এই দুই পুলিশ অফিসারের সঙ্গে তাঁর আলাপ। এক আইপিএসের সঙ্গে দক্ষিণ কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেলের নাইট ক্লাবে প্রায়ই যেতে দেখা যেত ইন্দ্রাণীকে। পার্ক স্ট্রিটের একটি নাইট ক্লাবেও অনেক রাত পর্যন্ত হুল্লোড় করতেন তাঁরা। অন্য আইপিএস নাইট ক্লাবে যেতেন না। তবে ইন্দ্রাণীকে নিয়ে বেশ কয়েক বার কলকাতার একটি অভিজাত ক্লাবে গিয়েছিলেন তিনি। ইন্দ্রাণী ও তাঁর তৎকালীন স্বামী সঞ্জীব খন্না— দু’জনেরই কলকাতার ক্লাবে নিয়মিত যাতায়াত ছিল। সে সময় পচনন্দা কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৮৬ ব্যাচের আইপিএস অফিসার মনোজ মালবীয়র সঙ্গে ইন্দ্রাণীর আলাপ নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে। সে সময় মনোজ ছিলেন কলকাতার ডিসি (ডিডি-স্পেশ্যাল)। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য আজ দুই আইপিএসের সঙ্গে বার বার চেষ্টার পরেও যোগাযোগ করা যায়নি। পচনন্দাকে ফোন করে, মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়েও জবাব মেলেনি। পচনন্দা ও মালবীয়, দু’জনেই অবশ্য পুলিশ মহলের বাইরেও পরিচিত নাম। দু’জনকে ঘিরেই অতীতে নানা বিতর্ক হয়েছে। বাম জমানায় একটি বিক্ষোভের সময় পচনন্দার বিরুদ্ধে কামড়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে পুলিশ কমিশনার হিসেবে এই পচনন্দাই মমতার অনুগত হিসেবে পরিচিতি পান। তবে খিদিরপুরে হরিমোহন ঘোষ কলেজে ছাত্র সংঘর্ষের মাঝে পড়ে এক পুলিশকর্মীর ম়ৃত্যুর পরে অভিযুক্ত শাসক দলের কর্মীদের গ্রেফতার করে মুখ্যমন্ত্রীর রোষে পড়েন তিনি। তার পরই পচনন্দাকে সরিয়ে দেন মমতা। এর পর দিল্লি চলে এলেও সিবিআইয়ে পচনন্দার নিয়োগ নিয়ে যথেষ্ট জলঘোলা হয়। প্রাক্তন সিবিআই অধিকর্তা রঞ্জিত সিন্‌হা তাঁর নিয়োগে আপত্তি জানান। শেষে সিআরপি, তার পরে সিআইএসএফ-এ নিয়োগ করা হয় তাঁকে। মনোজ মালবীয় অতীতে দিল্লিতে উড়ান নিরাপত্তার শীর্ষ পদ ব্যুরো অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটির অতিরিক্ত কমিশনার ছিলেন। সে সময় তাঁর বিরুদ্ধে পদ ব্যবহার করে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। সরকারের কাছে নালিশ জমা পড়ে— বিভিন্ন বিমান সংস্থায় প্রভাব খাটিয়ে তিনি সপরিবারে দেশবিদেশে ঘুরে বেড়িয়েছিলেন। সিবিআই তদন্তও হয়। এই তদন্তের সময়ই তাঁকে নিজের রাজ্যে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement