Ramesh Pokhriyal

মুখে সব ভাষার কথা, শিক্ষামন্ত্রীর ভরসা হিন্দিতেই 

দেশের সমস্ত ভাষার মধ্যেই যে লালিত্য, সৌন্দর্য রয়েছে, সে কথা আগাগোড়া রইল মন্ত্রীর বক্তব্যে। কিন্তু সঙ্গে জুড়লেন, সারা দেশকে জোড়ার মাধ্যম হতে পারে হিন্দি! শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে বিরোধী শিবিরে গুঞ্জন, ঝুলি থেকে তা হলে বেড়াল বেরিয়ে পড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২০ ০৩:৫২
Share:

ছবি: পিটিআই।

নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে যে সংবিধানে উল্লেখিত ২২টি ভারতীয় ভাষার পঠন-পাঠনেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, ফের সে কথা জোরের সঙ্গে বললেন শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক। কিন্তু একই মঞ্চে দাবি করলেন, বিশ্বে ভারতের পরিচিতি হিন্দিতেই!

Advertisement

দেশের সমস্ত ভাষার মধ্যেই যে লালিত্য, সৌন্দর্য রয়েছে, সে কথা আগাগোড়া রইল মন্ত্রীর বক্তব্যে। কিন্তু সঙ্গে জুড়লেন, সারা দেশকে জোড়ার মাধ্যম হতে পারে হিন্দি! প্রাচীন ভারতের শিক্ষা সম্ভার হাতে পেতে সংস্কৃতের প্রসারেও জোর দেওয়ার কথাও বার বার বলেছেন তিনি।

শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যে বিরোধী শিবিরে গুঞ্জন, ঝুলি থেকে তা হলে বেড়াল বেরিয়ে পড়েছে। শিক্ষানীতিতে ২২টি ভাষার কথা বললেও, আসলে তার মাধ্যমে হিন্দির পাঠ বাধ্যতামূলক করার পথে হাঁটতে চায় কেন্দ্র। দেশের বহু মানুষ, বিশেষ করে দক্ষিণের রাজ্যগুলি যার ঘোর বিরোধী। অনেকের কটাক্ষ, মুখে সমস্ত ভাষার কথা বললেও হৃদয়ে যে হিন্দি, তা এ দিন ‘ফাঁস হয়ে গেল’ মন্ত্রীর কথাতেই।

Advertisement

আরও পড়ুন: আগামী সপ্তাহেই মোদীর জন্য ‘এয়ার ইন্ডিয়া ওয়ান’

আরও পড়ুন: রাজ্যসভার উপনির্বাচনে যোগীরাজ্যে মুকুল?

শুক্রবার ‘মহাত্মা গাঁধী আন্তর্জাতিক হিন্দি বিশ্ববিদ্যালয়’-এর এক অনুষ্ঠানে ভিডিয়ো-বক্তৃতায় নিশঙ্ক বলেন, “বিশ্বে ভারতের যে পরিচিতি, তা হল হিন্দি। এতে অভিব্যক্তি, সংস্কৃতি, প্রকৃতি, প্রবৃত্তি সমস্ত কিছু রয়েছে।… আমার হিন্দি ও সংস্কৃত… হিন্দির মধ্যে তো ঢুকে রয়েছে সব কিছুই।” তাঁর মতে, সংবিধানে উল্লিখিত ২২টি ভাষার প্রত্যেকটির নিজস্ব সৌন্দর্য, শক্তি, লালিত্য এবং ধনী শব্দভাণ্ডার রয়েছে। তাদের সব কিছুকে মিশিয়েই হিন্দি বিকশিত হবে সারা বিশ্বে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, পড়াশোনাকে আকর্ষণীয় করার পাশাপাশি ভারতীয় ভাষাগুলিকে জাগিয়ে রাখার জন্যও অন্তত পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মাতৃভাষায় শিক্ষার কথা বলা হয়েছে নতুন শিক্ষানীতিতে। কিন্তু দেশীয় সমস্ত ভাষাকে সম্মান জানিয়ে এবং তাদের বাঁচিয়ে রাখতে দৃঢ়সঙ্কল্প হয়েও তিনি মনে করেন, সারা দেশকে এক সঙ্গে জোড়ার কাজ করতে পারে হিন্দি।

বিরোধীদের বরাবরের দাবি, মুখে স্বীকার না-করলেও, মোদী সরকার আসলে এক দেশ-এক ভাষার তত্ত্বে বিশ্বাসী। সঙ্ঘের চিন্তার মূলেও ‘হিন্দু-হিন্দি-হিন্দুস্তান’। ফলে মন্ত্রীর এ দিনের হিন্দির গুণগানকে সেই আতশকাচেই দেখছে তারা। শিক্ষাবিদদেরও একাংশের বক্তব্য, মন্ত্র ও

ব্রাহ্মণের ভাষা হিসেবে সংস্কৃতকে আলাদা মর্যাদা দেয় সঙ্ঘ। তাই প্রায় প্রতি মঞ্চে শিক্ষামন্ত্রীর মুখে তার তারিফও প্রত্যাশিত। শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে তিনটি সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তকমা দিয়েছেন নিশঙ্ক। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ওই ভাষাকে দ্বিতীয় সরকারি ভাষার মর্যাদাও দিয়েছিলেন তিনি।

এই অনুষ্ঠানেই মন্ত্রী জানিয়েছেন, ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবসকে এ বার আন্তর্জাতিক ভাবে বড় মাপে পালন করতে চান তাঁরা। সে দিন থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে নাগাড়ে প্রচার চালাতে চান নতুন শিক্ষানীতির বিষয়ে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement