গত নভেম্বরে ওমিক্রনকে উদ্বেগজনক বলে ঘোষণা করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। ফাইল চিত্র।
ওমিক্রনের পরে, গত এক বছরে নতুন করে করোনাভাইরাসের কোনও প্রজাতি উদ্বেগজনক বা ‘ভেরিয়েন্ট অব কনসার্ন’ বলে চিহ্নিত হয়নি। সে কথা উল্লেখ করে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের (আইসিএমআর) প্রাক্তন বিজ্ঞানী রামন গঙ্গাখেদকরের পর্যবেক্ষণ, এই ভাইরাসের থেকে সার্বিক পরিস্থিতি আর খুব খারাপ হওয়ার ঝুঁকি নেই। তবে এখনও বদ্ধ জায়গায় এবং বড় জমায়েতে মাস্ক পরায় জোর দিচ্ছেন তিনি। বিশেষত প্রবীণ মানুষজন এবং যাঁদের কো-মর্বিডিটি রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে।
গঙ্গাখেদকর একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘আগে আমরা প্রতি ছ’মাস অন্তর নতুন ঢেউ আসতে দেখেছি। কিন্তু গত এক বছরে ওমিক্রনেরই জের চলছে।’’ চিনের উহানে প্রথম যে করোনাভাইরাস মিলেছিল, তার ৩৭ বার অভিযোজন হয়ে এসেছে ওমিক্রন। গত নভেম্বরে এই ভেরিয়েন্টকে উদ্বেগজনক বলে ঘোষণা করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। তবে মানবদেহে টিকে থাকতে মরিয়া এই ভাইরাস ইতিমধ্যেই যথেষ্ট পিছু হটেছে বলে পর্যবেক্ষণ গঙ্গাখেদকরের। তিনি জানান, ভাইরাসের ওমিক্রন-পরবর্তী অল্প-বিস্তর যা রূপ-বদল হয়েছে, তা একই গোত্রের মধ্যে। তার প্রকোপে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বাড়েনি বা গুরুতর হয়ে ওঠেনি সংক্রমণ পরিস্থিতি। তিনি বলছেন, ‘‘আমি যতদূর বুঝছি, আর বড়সড় কোনও বিপদ নেই।’’
তবে এক বার আক্রান্ত হওয়ার পরে কেউ যদি ফের সংক্রমিত হন, সেটা যতই মৃদু হোক না-কেন, পোস্ট কোভিড বা কোভিড পরবর্তী জটিলতার ঝুঁকি তাতে বাড়ে বলে জানাচ্ছেন গঙ্গাখেদকর। তাই এখনও মাস্ক পরা ও সতর্ক থাকাতেই জোর দিচ্ছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও উৎসব-অনুষ্ঠান বা অনেকে এক জায়গায় থাকলে আমি নিজে মাস্ক পরি। এটা জীবনযাপনের একটা অভ্যাস, আমাদের নিজেদের সুরক্ষার জন্যই দরকার।’’ প্রতিষেধকের সতর্কতামূলক বা বুস্টার ডোজ় নিয়ে রাখলে সংক্রমণ হলেও বাড়াবাড়ি কম হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
পরবর্তী অতিমারি আগে থেকে ধরতে পারার জন্য মানুষ, পশুপাখি, গাছপালা এবং পরিবেশ— সমস্ত নিয়ে ‘ওয়ান হেলথ সার্ভেইলেন্স’ বা একক নজরদারিতে সরকার যাতে জোর দেয়, এই পরিস্থিতিতে সেই সুপারিশ করছেন গঙ্গাখেদকর।