নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে ‘নমস্তে’ প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের। স্যালুট করলেন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল সের্গেই সয়গু। বৃহস্পতিবার মস্কো বিমানবন্দরে। টুইটারে সে ছবি প্রকাশ করল মন্ত্রক।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ মস্কো বিমানবন্দরে নামার পরে তাঁকে স্বাগত জানাতে আসা রুশ সেনাকর্তা মেজর জেনারেল বুক্তিভ ইউরি নিকোলায়েভিচ সামরিক কায়দায় স্যালুট জানালেন তাঁকে। উত্তরে জোড় হস্ত রাজনাথ, মুখে বললেন— ‘নমস্তে’। এর পরে মস্কোয় ভারতীয় রাষ্ট্রদূত ডিবি বেঙ্কটেশ বর্মাকে পাশে নিয়ে যখন হাঁটা শুরু করলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী, সারি দিয়ে দাঁড়ানো রুশ সেনাকর্তাদের এক জনও স্যালুটের পরে হাত বাড়িয়ে দিলেন ‘শেকহ্যান্ড’-এর জন্য। এ বারেও করজোড় রাজনাথের জবাব— নমস্তে। সেনাকর্তাকেও দেখা গেল হাত জোড় করতে, অস্ফুট উচ্চারণে বললেনও ‘নমস্তে’।
করোনা-পরিস্থিতিতে সৌজন্য প্রদর্শনের অঙ্গ হিসেবে করমর্দনের চেয়ে ভারতীয় প্রথায় করজোড়ে নমস্তে বলাটা এখন বিশ্বজুড়েই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। দূরত্ব-বিধিও রক্ষিত হয় এতে।
সাংহাই সহযোগিতা সংগঠন (এসসিও)-এর বৈঠক রাজনাথের এ বারের সফরের প্রধান কারণ হলেও, একমাত্র নয়। এর আগে, অতিমারি ছড়িয়ে পড়ার পরে জুনেও মস্কো এসেছিলেন ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, চিনের সঙ্গে সম্পর্কে উত্তেজনা সঞ্চারের পর থেকেই উত্তাপ নিরসনে নিরন্তর প্রয়াসী ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ। ভারত-রাশিয়ার মতো সাংহাই সহযোগিতা সংগঠনের সদস্যদেশ চিনও। গালওয়ানের সংঘর্ষ বড় মাত্রা নেয়নি সত্য, কিন্তু লাদাখে গ্যাংগং হ্রদের তীরে শান্তি নেমে এসেছে— বিষয়টি তা-ও নয়। তবে চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল উই ফেংহে এবং পাকিস্তান সেনার ঊর্ধতন কর্তা পারভেজ খটকের আসার কথা এসসিও-র বৈঠকে। চিনের তরফে রাজনাথের সঙ্গে উইয়ের এওকটি একান্ত বৈঠকের সময় চাওয়া হয়েছে। শুক্রবার সেটি হতে পারে। আলোচনা টেবিলে দুই প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মুখোমুখি উপস্থিতি উত্তেজনা প্রশমনে উপযোগী হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: জঙ্গি তালিকায় ভারতীয়! ব্যর্থ হল পাকিস্তানের চেষ্টা
রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইগুর সঙ্গে রাজনাথের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকটিও বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে নতুন পরিস্থিতিতে। রাজনাথ নিজেও টুইটে বা দিল্লি ছাড়ার আগে সাংবাদিকদের উদ্দেশে জানিয়েছেন, রাশিয়া ভারতের কৌশলগত সহযোগী দেশ। তাদের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আন্তর্জাতিক থেকে আঞ্চলিক সব রকম বিষয়েই আলোচনা হবে। কী ভাবে এই সহযোগিতাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, তার সুযোগগুলি খতিয়ে দেখবেন তাঁরা। একই সঙ্গে ভারতীয় বাহিনীর জন্য সর্বাধুনিক ‘অ্যাসল্ট কালাসনিকভ ২০৩’ রাইফেল কেনার বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত রয়েছে। এই সফরে তা চূড়ান্ত করার চেষ্টা করবেন রাজনাথ। ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা এস-৪০০ কেনা নিয়ে অবশ্য পাকা কথা হয়ে গিয়েছে আগেই। ২০২১-এর মধ্যে সেই গুরুত্বপূর্ণ শস্ত্রটি ভারতে আসার কথা। এ বিষয়টিও আলোচনায় থাকছে বলে জানিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বৈঠক চাইলেন চিনা মন্ত্রী ॥ উত্তেজনার জন্য চিনই দায়ী: দিল্লি