প্রতিরক্ষামন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা রাজনাথ সিংহ। ছবি পিটিআই।
বিজেপি শাসিত বেশ কয়েকটি রাজ্য বিয়ের জন্য ধর্মান্তরণ রুখতেই আইন তৈরি করছে। যা নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত। এই আবহে ধর্মান্তরণ নিয়ে মুখ খুললেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা রাজনাথ সিংহ। বিয়ের জন্য ধর্মান্তরণকে উচিত বলে মনে করেন না প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
বিজেপি শাসিত যে সব রাজ্য বিয়ের জন্য ধর্মান্তরণ রুখতে আইন প্রণয়ন করেছে তার মধ্যে উত্তরপ্রদেশ অন্যতম। এই আইনের অপপ্রয়োগ হচ্ছে বলে ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। রাজনাথের নির্বাচনী কেন্দ্রও উত্তরপ্রদেশের লখনউ। আইনের অপপ্রয়োগ নিয়ে যে অভিযোগ উঠছে তার কোনও উত্তর দেননি প্রতিরক্ষামন্ত্রী। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ধর্মান্তরণ রুখতে আইন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘আমি জানতে চাই ধর্মান্তরণের প্রয়োজন কেন! গণধর্মান্তরণ বন্ধ হওয়া উচিত।’’ এর পরেই তাঁর সংযোজন, ‘‘আমি যতদূর জানি, মুসলিম সম্প্রদায়ের কোনও ব্যক্তি অন্য ধর্মে বিয়ে করতে পারেন না। আমি ব্যক্তিগত ভাবে বিয়ের জন্য ধর্মান্তরণকে সমর্থন করি না।’’
প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনে করেন, স্বাভাবিক বিয়ে এবং ধর্মান্তরণের জন্য বিয়ের মধ্যে ফারাক রয়েছে। রাজনাথের কথায়, ‘‘অনেক সময়ই আপনারা দেখতে পান, ভয় দেখিয়ে অথবা লোভ দেখিয়ে ধর্ম পরিবর্তন করানো হয়। স্বাভাবিক ভাবে বিয়ে ও বিয়ের জন্য জোর করে ধর্ম পরিবর্তন করানোর মধ্যে বড়সড় ফারাক রয়েছে। আমি মনে করি, এই সব দিক বিবেচনা করে সরকারের আইন তৈরি করা উচিত।’’ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে অনেকেই মনে করেছেন, রাজনাথ প্রকারান্তরে বিয়ের জন্য ধর্মান্তরণ রুখতে আইন প্রণয়নের পক্ষেই সওয়াল করেছেন।
বিয়ের জন্য ধর্মান্তরণ রুখতে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির তৈরি আইনকে ইতিমধ্যেই চার জন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়েছেন। দিল্লি হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি তথা জাতীয় আইন কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান এ পি শাহ বলেছিলেন, বিয়ের জন্য ধর্মান্তরণ রুখতে যে আইন আনা হয়েছে, তার অনেকগুলি ধারা মানুষের মৌলিক অধিকারে আঘাত করে।
ধর্মান্তরণের ঘটনা যে কোনও ভাবেই রেওয়াত করা হবে না, সেই হুঁশিয়ারি ইতিমধ্যেই দিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিজেপি শাসিত রাজ্য সরকারগুলির বেশ কয়েক জন মন্ত্রী। ভিন্ ধর্মে বিয়ের জন্য গত কাল উত্তরাখণ্ডে এক দম্পতি ও দু’ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগ, তাঁরা উত্তরাখণ্ড ফ্রিডম অব রিলিজিয়ন অ্যাক্ট লঙ্ঘন করেছেন। পটেল নগর থানায় ওই দম্পতি ও দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। সার্কেল অফিসার অঞ্জু কুমার জানিয়েছেন, আইন অনুযায়ী ধর্মান্তরণের জন্য এক মাস আগে জেলাশাসককে জানাতে হবে। ওই মহিলা বিয়ের জন্য ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু তিনি তাঁর পরিবার ও প্রশাসনকে এ ব্যাপারে কিছুই জানাননি। ওই মহিলার স্বামীর কাকা ও বিয়ে দিয়েছিলেন যে কাজি তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে।