একত্রবাসের চুক্তিপত্রের জন্য সরকারকে পদক্ষেপের নির্দেশ রাজস্থান হাই কোর্টের। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
একত্রবাসের জন্য বাধ্যতামূলক ভাবে চুক্তিপত্রের ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকে। বুধবার এক মামলায় এ কথা জানিয়েছে রাজস্থান হাই কোর্ট। চুক্তিপত্রে কোন কোন শর্তাবলির উল্লেখ থাকতে হবে, তা-ও নির্দেশনামায় জানিয়েছে আদালত।
হাই কোর্টের নির্দেশ, কোনও যুগল একত্রবাসে থাকতে চাইলে কিছু তাঁদের জন্য একটি চুক্তিপত্র থাকবে। যুগল একত্রবাসে থাকাকালীন কোনও পরিবার পরিকল্পনা করছেন কি না, সন্তানের জন্ম দিলে তার শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে কী কী ভাবনা রয়েছে, তা চুক্তিপত্রে উল্লেখ থাকতে হবে। একত্রবাসে থাকা তরুণী রোজগেরে না-হলে, তাঁর রোজগেরে সঙ্গীর কী কী দায়দায়িত্ব থাকবে এবং সন্তানের জন্ম হলে, তার প্রতিই বা কী দায়িত্ব থাকবে, সে কথাও চুক্তিপত্রে থাকতে হবে।
আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ অনুসারে, আদালত জানিয়েছে, সরকারের তরফে এ বিষয়ে যথাযথ আইন কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত প্রতিটি জেলায় একত্রবাসের বিষয়টি দেখার জন্য নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষকে থাকতে হবে। জেলা স্তরের ওই কর্তৃপক্ষ একত্রবাসে থাকা সম্পর্কগুলিকে নথিভুক্ত করবেন। ওই কর্তৃপক্ষই যুগলের অভিযোগ শুনবেন এবং প্রয়োজনীয় সমাধানের ব্যবস্থাও করবেন। একত্রবাসে থাকা যুগলের অভিযোগ শোনা এবং তার সমাধানের জন্য একটি ওয়েবসাইট বা পোর্টাল তৈরিরও প্রস্তাব দিয়েছে রাজস্থান হাই কোর্ট।
হাই কোর্টের বিচারপতি অনুপ কুমার নির্দেশনামায় জানিয়েছেন, সমাজ এখনও এই ধরনের সম্পর্ককে অনুমোদন দেয় না। হিন্দু বিবাহ আইনে একত্রবাসের কোনও ধারণার উল্লেখ নেই। মুসলিম আইনেও এ ধরনের সম্পর্ককে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। তবে নির্দেশামায় তিনি লিখেছেন, এ ধরনের সম্পর্ক বেআইনি নয় বলে অতীতে বিভিন্ন মামলায় জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত অতীতে জানিয়েছে, এটি পুরোটাই ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত এবং এটি কোনও পাপও নয়।
সম্প্রতি উত্তরাখণ্ডে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হয়েছে। সেখানেও একত্রবাসের জন্য ‘রেজিস্ট্রেশন’-এর কথা বলা হয়েছে। উত্তরাখণ্ডের অভিন্ন দেওয়ানি বিধি অনুসারে বিয়ের মতো প্রায় একই ধাঁচের রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে একত্রবাসের জন্যও। একত্রবাসে থাকা যুগল কোনও সন্তানের জন্ম দিলে, তাকে যুগলের সন্তান হিসাবে আইনি বৈধতা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে নতুন বিধিতে। উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে যাতে ওই সন্তান সমানাধিকার পায়, তা নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।