ফাইল চিত্র।
মসজিদে লাউডস্পিকার বাজানো নিয়ে মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস) প্রধান রাজ ঠাকরের হুঁশিয়ারির জেরে আজ দিনভর উত্তেজনা মুম্বই-সহ গোটা মহারাষ্ট্রে। বড়সড় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এমএনএস প্রধান আজ জানিয়ে দিয়েছেন, মসজিদে লাউডস্পিকার থামাতে তাঁদের লড়াই জারি থাকবে। রাজ্য জুড়ে আজ অন্তত ২৫০ জন এমএনএস কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
রাজ ঠাকরে গত ১২ এপ্রিল রাজ্য সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, ৩ মে-র মধ্যে মসজিদগুলি থেকে লাউডস্পিকার খুলতে হবে। গত ১ মে ঔরঙ্গাবাদে এক সভায় তিনি বলেছিলেন, ৪ মে-র মধ্যে মসজিদগুলিতে লাউডস্পিকার বন্ধ না করলে সেখানে হনুমান চালিসা লাউডস্পিকারে বাজানো হবে। আজ ফের একই হুমকি দিয়েছেন এমএনএস প্রধান। তিনি জানান, বিষয়টি শুধু মসজিদের নয়, অবৈধ ভাবে অনেক মন্দিরেও লাউডস্পিকার বাজান হয়। তাঁর কথায়, ‘‘অবৈধ লাউডস্পিকারের ব্যবহার কোনও ধর্মীয় বিষয় নয়। এটা সামাজিক বিষয়।’’ তাঁর প্রতিবাদে সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতার কোনও সম্পর্ক নেই বলেও দাবি রাজের। তাঁর কথায়, ‘‘সাম্প্রদায়িক অস্থিরতার পরিবেশ তৈরির কোনও ইচ্ছা আমাদের নেই। মহারাষ্ট্রে শব্দ দূষণ বন্ধ হওয়া উচিত। যত দিন তা না হবে, তত দিন প্রতিবাদ চলবে।’’ লাউডস্পিকার বন্ধের দাবিতে এক সময় সরব ছিলেন শিবসেনার প্রয়াত প্রধান বাল ঠাকরে। লাউডস্পিকার বন্ধের দাবিতে তাঁর বক্তৃতার কিছু অংশের ভিডিয়ো আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন রাজ।
আজ রীতিমতো চড়া সুরে রাজ বলেন, ‘‘৪৫-৫৫ ডেসিবেল আওয়াজ ঠিক আছে। এর জন্য লাউডস্পিকারের দরকার কী? অবৈধ লাউডস্পিকার সরাতেই হবে।’’ তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘মসজিদগুলি যদি নির্দেশিকা না মানে, তা হলে মসজিদের সামনে দ্বিগুণ জোরে লাউডস্পিকার বাজিয়ে হনুমান চালিসা পাঠ হবে।’’
রাজের হুঁশিয়ারির জেরে পুলিশকর্মীদের ছুটি বাতিল করে সংবেদনশীল এলাকাগুলিতে বাড়তি নিরাপত্তাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে জানানো হয়, রাজ্যে ১১৪০টি মসজিদের মধ্যে ১৩৫টিতে লাউডস্পিকার বাজানো হয়েছে। যারা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানেনি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঔরঙ্গাবাদে ১ মে-র বক্তৃতার জন্য রাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ।
এমএনএস প্রধানের হুঁশিয়ারিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না শিবসেনা। দলের মুখপাত্র সাংসদ সঞ্জয় রাউতের কথায়, ‘‘লাউডস্পিকার নিয়ে যা হচ্ছে, তা আদতে হিন্দুত্বের শ্বাসরোধ করছে। বহু মন্দিরেও লাউডস্পিকার বাজানো হয়। কারণ, ভক্তেরা যাতে সকালে প্রার্থনা শুনতে পান। বিজেপির উস্কানিতে রাজ ঠাকরে এই সব করছেন। শিবসেনাকে কারও কাছ থেকে হিন্দুত্বের পাঠ নিতে হবে না।’’