রাহুল গান্ধী ওয়েনাড়বাসীকে লিখলেন চিঠি। — নিজস্ব চিত্র।
দরকারের সময় পাশে ছিলেন ওয়েনাড়বাসীই। ‘সুরক্ষা এবং ভালবাসা’ দিয়েছেন। ওয়েনাড় লোকসভা আসন ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর সেখানকার মানুষজনকে চিঠি দিলেন সাংসদ রাহুল গান্ধী। চিঠিতে জানালেন, ওয়েনাড় আসনটি ছাড়ছেন বলে দুঃখিত। তবে সান্ত্বনা একটাই, ওই আসনে লড়তে চলেছেন তাঁর বোন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা। ওয়েনাড়বাসী সুযোগ দিলে তিনি ভাল কাজ করবেন বলে নিশ্চিত দাদা রাহুল। সোমবার লোকসভায় শপথ গ্রহণ করবেন নতুন নির্বাচিত সাংসদেরা। তার আগে রাহুলের এই চিঠি প্রকাশ্যে এল।
চলতি লোকসভা নির্বাচনে ওয়েনাড় এবং পরে রায়বরেলী থেকে লড়েছিলেন রাহুল। দু’টি আসনেই জয়ী হয়েছেন তিনি। যদিও শেষ পর্যন্ত ১৭ জুন মা সনিয়া গান্ধীর ছেড়ে যাওয়া রায়বরেলী আসনটি রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তাঁর ছেড়ে যাওয়া রায়বরেলি আসনে লড়তে চলেছেন বোন প্রিয়ঙ্কা। এ বার ওয়েনাড়বাসীকে লেখা রাহুলের আবেগপূর্ণ চিঠি প্রকাশ্যে। রবিবার তিনি লিখেছেন, ‘‘আমি দুঃখিত। কিন্তু আমার সান্ত্বনা হল, প্রিয়ঙ্কা ওখানে আপনাদের প্রতিনিধিত্ব করবে।’’ তাঁর বিশ্বাস, ওয়েনাড়বাসী সুযোগ দিলে ভাল কাজ করবেন প্রিয়ঙ্কা।
রাহুল আরও লিখেছেন, ‘‘আমার কাছে আরও একটা সান্ত্বনা হল, রায়বরেলির লোকজন আমার পরিবারের মতো। তাঁদের সঙ্গে একটি বন্ধন রয়েছে। আপনাদের এবং রায়বরেলীর মানুষের কাছে আমার অঙ্গীকার হল, দেশে যে হিংসা এবং ঘৃণা ছড়াচ্ছে, তার বিরুদ্ধে লড়াই।’’ ওয়েনাড়বাসীকে কী ভাবে ধন্যবাদ জানাবেন, তা অজানা বলেও চিঠিতে লিখেছেন রাহুল। যখন তাঁর সব থেকে বেশি দরকার ছিল, তখনই এখানকার মানুষজন ‘ভালবাসা এবং সুরক্ষা’ দিয়েছেন। ওয়েনাড়বাসী তাঁর পরিবারেরই অংশ। প্রত্যেক মানুষের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রাহুল। প্রসঙ্গত, সোমবারই লোকসভায় শপথ নিতে চলেছেন নতুন সাংসদেরা। দু’দিন ধরে চলবে শপথগ্রহণ। রায়বরেলীর সাংসদ হিসাবে শপথ নেবেন রাহুলও। তার আগে প্রকাশ্যে এল এই চিঠি।
রায়বরেলীতে এ বার রেকর্ড ভোটে জয়ী হয়েছেন রাহুল। এই আসনে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সাংসদ ছিলেন সনিয়া। তারও আগে রায়বরেলী থেকে কংগ্রেসের সাংসদ ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। তবে কংগ্রেসের এই পুরনো গড়ে রাহুল এ বছর পেয়েছেন মা সনিয়ার থেকেও বেশি ভোট। বিজেপির প্রার্থীকে হারিয়েছেন প্রায় চার লক্ষ ভোটে। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশের অমেঠী থেকে হেরে গেলেও কেরলের ওয়েনাড় জিতিয়েছিল রাহুলকে। রায়বরেলীতে জেতার পরে সেই ওয়েনাড় ছেড়ে দেন রাহুল।
রাহুলের ছেড়ে দেওয়া আসনে লড়তে চলেছেন প্রিয়ঙ্কা। এই প্রথম সংসদীয় রাজনীতিতে পা রাখছেন তিনি। প্রসঙ্গত, এই প্রথম গান্ধী-নেহরু পরিবারের কোনও রাজনীতিক শুধুমাত্র দক্ষিণ ভারত থেকে জীবনে প্রথম বার লোকসভা ভোটে লড়তে চলেছেন। রাহুল এবং তাঁর ঠাকুমা দক্ষিণ ভারত থেকে লোকসভা ভোটে লড়ে জিতলেও জীবনের প্রথম নির্বাচন উত্তরপ্রদেশ থেকে লড়েছিলেন। সনিয়া গান্ধী ১৯৯৯ সালে প্রথম বার লোকসভা নির্বাচনে লড়েছিলেন। সে বার উত্তরপ্রদেশের রায়বরেলীর পাশাপাশি কর্নাটকের বল্লারীকেও বেছে নিয়েছিলেন।