প্রবীণদের ডানা ছাঁটতে চান রাহুল, সতর্ক সনিয়া

দিল্লিতে হারের পর কংগ্রেসে অবশ্য খেয়োখেয়ি এখনও মেটেনি।

Advertisement

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:২৯
Share:

ছবি পিটিআই।

লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের দায় নিয়ে ইস্তফা ঘোষণা করেছিলেন রাহুল গাঁধী। সঙ্গে চেয়েছিলেন, দলে বাকি প্রবীণেরাও ইস্তফা দিন। দলের চাপে সনিয়া গাঁধী অন্তর্বর্তী সভানেত্রীর দায়িত্ব নিয়েছেন গত অগস্টে। রাহুলকে ফের পদে ফেরানোর তোড়জোড়ও চলছে দলে। কিন্তু রাহুল দলে যে ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’ চেয়েছিলেন, তা হয়নি। সনিয়াও সে কাজে হাত দেননি। কংগ্রেসের এক সূত্রের দাবি, এই নিয়ে মতভেদ তৈরি হয়েছে সনিয়া ও রাহুলের মধ্যে।

Advertisement

কংগ্রেসের এক নেতা আজ বলেন, ‘‘রাহুল চাইছিলেন, সনিয়ার হাত ধরেই প্রবীণ নেতাদের ডানা ছাঁটার কাজ হোক। কিন্তু তিনি সে কাজে হাত দেননি। কিছু রাজ্যে বদল করছেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্তরে নয়। হতে পারে, রাহুলের ফেরা পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন সনিয়া। মনে করছেন, পদে ফিরে রাহুলই নিজের মতো টিম তৈরি করবেন। অন্তর্বর্তী সভানেত্রী হিসেবে নতুন টিম তৈরির কী অর্থ?’’ তা হলে কী রাহুল শীঘ্রই সভাপতি পদে ফিরছেন? ওই নেতার দাবি, তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা চলছে। একমাত্র রাহুলই নেতৃত্ব দিতে পারেন, অন্য কেউ নয়।

দিল্লিতে হারের পর কংগ্রেসে অবশ্য খেয়োখেয়ি এখনও মেটেনি। প্রয়াত শীলা দীক্ষিতের ছেলে সন্দীপ আজ বলেন, ‘‘সনিয়া গাঁধী অন্তর্বর্তী সভানেত্রী। রাহুল গাঁধী সভাপতি হতে চাইছেন না। যদি কখনও হতে চান, যে কোনও সময় ফিরে আসতে পারেন। এমন এক পরিস্থিতিতে প্রবীণ নেতারা মিলে কেন একজন সভাপতি খুঁজে পাচ্ছেন না? কেন একসঙ্গে আসছেন না অমরেন্দ্র সিংহ, অশোক গহলৌত, কমল নাথেরা? এ কে অ্যান্টনি, পি চিদম্বরম, আহমেদ পটেলরাও রাজনৈতিক জীবনের শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছেন। সকলে মিলে তো নতুন নেতা খোঁজার দায়িত্ব নিতে পারেন!’’

Advertisement

সন্দীপ দীক্ষিতের বক্তব্যে সায় দিয়ে দলের আর এক নেতা শশী তারুর বলেন, ‘‘গোটা দেশে কংগ্রেসের অনেক নেতাই ব্যক্তিগত আলোচনায় এই কথা বলছেন। এমনকি গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ব্যক্তিও। ওয়ার্কিং কমিটির কাছে আবেদন করছি, কর্মীদের চাঙ্গা করতে ও ভোটারদের অনুপ্রেরণা দিতে নেতৃত্বের নির্বাচন হোক।’’ ক’দিন আগে এআইসিসি-র মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারি তাঁর তিন বছরের পুরনো একটি নিবন্ধ সোশ্যাল মিডিয়ায় ফের পোস্ট করে বলেন, আর্থিক দর্শন, ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদের প্রশ্নে রাস্তায় গিয়ে লড়াই দরকার দলের। অন্য নেতাদের মতে, তিন বছর পরেও যদি একই বিষয় কংগ্রেসে প্রাসঙ্গিক থাকে, তা হলে দল এক বিন্দুও এগোয়নি।

কংগ্রেসে নানা মুনির নানা মত দেখে সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে কথা বলে দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা আজ আরও একবার রাশ টেনে ধরার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, ‘‘যে নেতারা প্রকাশ্যে এত কথা বলছেন, তাঁরা যদি দলের কাজে সেই শক্তি ব্যয় করতেন, তা হলে কংগ্রেস জিতত। আমাদের সকলেরই আত্মবিশ্লেষণ করে দেখতে হবে, কেন আমরা নিজেদের কেন্দ্রে হারছি? আর শশী তারুর যে ওয়ার্কিং কমিটির দোহাই দিচ্ছেন, সেই কমিটিই সভাপতি নির্বাচন করেছে। দলের সংবিধানটি পড়ে নিলে তাঁর জ্ঞান বাড়বে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement