গান্ধীর প্রয়াণবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে রাজঘাটে নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই
মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধীর মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁকে শ্রদ্ধা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। হিন্দু মহাসভা শ্রদ্ধা জানাল গান্ধীর হত্যাকারী নাথুরাম গডসেকে।
প্রধানমন্ত্রী আজ গান্ধীকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেছেন, ‘বাপুকে তাঁর পুণ্য তিথিতে স্মরণ করছি। তাঁর মহৎ আদর্শের আরও প্রচারে আমাদের সকলকে মিলিত ভাবে চেষ্টা করতে হবে।’ রাজঘাটে গিয়েও গান্ধীকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন মোদী। প্রধানমন্ত্রী আজ গান্ধীর মৃত্যুবার্ষিকীতে পালিত শহিদ দিবস-এ দেশের রক্ষায় যাঁরা লড়াই করেছেন, তাঁদের সবাইকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। বলেছেন, শহিদদের সেবা ও বীরত্ব চিরকাল স্মরণে রাখা হবে।
মোদী যখন গান্ধীকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন, তখনই বিজেপি-শাসিত মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু মহাসভা নাথুরাম গডসে ও গান্ধীয় হত্যায় আর এক অভিযুক্ত নারায়ণ আপ্তেকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে। এ দিন হিন্দু মহাসভা গোয়ালিয়রে গডসে-আপ্তে স্মৃতি দিবসও পালন করেছে। সংগঠনের তরফে উগ্র হিন্দুত্ববাদী বলে পরিচিত কালীচরণ মহারাজকে ‘গডসে-আপ্তে ভারতরত্ন’ সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে।
গত মাসে রায়পুরের ধর্ম সংসদে স্বঘোষিত এই কালীচরণ গান্ধীর বিরুদ্ধে অপমানজনক মন্তব্য করেছিলেন। তার পরে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে এখন জেলে বন্দি। হিন্দু মহাসভার জাতীয় সহ সভাপতি জয়বীর মহারাজ জানিয়েছেন, তাঁরা গান্ধীর হত্যার পরে নাথুরাম গডসেকে গ্রেফতারির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতেই গডসে-আপ্তে স্মৃতি দিবস পালন করছেন।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী আজ মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধীর মৃত্যুবার্ষিকীতে ফের হিন্দু বনাম হিন্দুত্ববাদীর ফারাক টেনে এনেছেন। রাজঘাটে শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর মন্তব্য, এক জন হিন্দুত্ববাদী গান্ধীজিকে গুলি করেছিলেন। সব হিন্দুত্ববাদীর মনে হয়, গান্ধীজি আর নেই। আসলে যেখানেই সত্য, সেখানেই বাপু জীবিত রয়েছেন। কংগ্রেসের বক্তব্য, আরএসএস-বিজেপি নেতারা নিজেদের হিন্দু বলে প্রচার করেন। আসলে তাঁরা হিন্দুত্ববাদী। ঠিক যেমন নাথুরাম গডসে হিন্দুত্ববাদী ছিল। রাহুলের খোঁচার জবাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুখতার অব্বাস নকভি পাল্টা আক্রমণে গিয়ে বলেছেন, কংগ্রেসের এই হিন্দুত্ববিরোধী মন্ত্রের জন্যই কংগ্রেস অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। হিন্দুত্বও এই দেশের আত্মা ও সংস্কৃতি।
প্রজাতন্ত্র দিবসের ঠিক আগে মোদী সরকার ইন্ডিয়া গেটের অমর জওয়ান জ্যোতি নিভিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় অভিযোগ উঠেছিল, মোদী সরকার ‘শহিদ’ জওয়ানদের অপমান করছেন। কেন্দ্রের যুক্তি ছিল, জাতীয় যুদ্ধ স্মারকে অমর জওয়ান জ্যোতিতে ইন্ডিয়া গেটের অমর জওয়ান জ্যোতির শিখা মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তার পরেও এ নিয়ে অনেক প্রাক্তন সেনা জওয়ান এবং অফিসার কেন্দ্রের সমালোচনা করেছিলেন।
আজ প্রধানমন্ত্রী তাঁর মন কি বাত রেডিয়ো-বার্তায় দাবি করেছেন, অনেক অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসার তাঁকে চিঠি লিখে এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন। কারণ ওই স্মারকে স্বাধীনতার পর থেকে সমস্ত যুদ্ধে নিহত সেনা জওয়ানদের নাম খোদাই করা রয়েছে। তাই সেখানে অমর জওয়ান জ্যোতি নিয়ে যাওয়ার প্রশংসা করেছেন অবসরপ্রাপ্ত ফৌজিরা। প্রধানমন্ত্রী আজ সবাইকে জাতীয় যুদ্ধ স্মারকে যাওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন।