রাহুল গাঁধী। ফাইল চিত্র।
কংগ্রেস সভাপতি পদে তাঁর উত্তরসূরি বাছাইয়ের আগে দলের কেন্দ্রীয় ও রাজ্যস্তরের সব শীর্ষ নেতার সঙ্গে আলোচনা করতে বললেন রাহুল গাঁধী।
রাহুলের ইস্তফা ঘোষণার প্রায় আড়াই মাস পর আগামিকাল ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডেকে নতুন সভাপতি স্থির করার কথা ছিল। যে দৌড়ে আহমেদ পটেলদের শিবির থেকে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে মুকুল ওয়াসনিকের নাম। দাবি করা হচ্ছে, কংগ্রেস কর্মীদের বড় অংশ ওয়াসনিককেই পছন্দ করছেন। একই সঙ্গে বলা হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত ওয়াসনিকের নামে সর্বসম্মতি না হলে সভাপতি হতে পারেন কুমারী শৈলজা। আহমেদ পটেল এ দিন এ কে অ্যান্টনিকে সঙ্গে নিয়ে দশ জনপথে সনিয়া গাঁধীর কাছে যান। সভাপতি নির্বাচন নিয়েই তাঁদের মধ্যে কথা হয়েছে বলে খবর। আহমেদ পটেলের বিরোধী শিবির আবার মল্লিকার্জুন খড়্গে অথবা সুশীলকুমার শিন্ডের কথা বলছে। ঘোরাফেরা করছে পি এল পুনিয়ার নামও। এঁরা সকলেই দলিত নেতা এবং গাঁধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ। এরই মধ্যে মুম্বইয়ের সভাপতি মিলিন্দ দেওরা আজ ফের জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া অথবা সচিন পাইলটকে সভাপতি করতে বলেছেন।
সব মিলিয়ে রাহুলের বিকল্প কে, সেই প্রশ্নে ঐকমত্য নেই দলে। কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, নতুন সভাপতি নির্বাচনকে ঘিরে দলে যাতে ভাঙন না ধরে সেই জন্যই এই কৌশল। তবে দলীয় সংগঠনে আহমেদ পটেলের নিয়ন্ত্রণ যাতে আরও জোরদার না হয় সেই জন্যই রাহুল এই পথে হাঁটলেন কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে।
আজ সন্ধ্যায় দলের সাধারণ সম্পাদক, সচিব, সাংসদ, প্রদেশ সভাপতি, পরিষদীয় নেতাদের বৈঠকে ডেকেছিলেন রাহুল। ছিলেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাও। বৈঠক ডাকা হয়েছিল সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ নিয়ে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি যে অবস্থান নিয়েছে, তা নেতাদের বোঝাতে। রাহুলের সামনেই তাঁদের কয়েক জন বলেন, ‘‘আমাদের সভাপতি চাই।’’ রাহুল বলেন, ‘‘আগামিকালই বৈঠক আছে। আপনারা সকলে যখন দিল্লিতেই আছেন, তখন আপনাদের মতও নেওয়া হবে। তিন-চার দিনের মধ্যেই নতুন সভাপতি পেয়ে যাবেন।’’ বৈঠক শেষে সংগঠনের দায়িত্বে থাকা নেতা কে সি বেণুগোপাল বলেন, ‘‘কাল থেকে রাজ্য ধরে ধরে সকলের মত নেওয়া হবে। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ওয়ার্কিং কমিটিই।’’
রাহুল যখন ৩৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে দলের অবস্থান স্পষ্ট করতে নেতাদের সঙ্গে বসেছেন, তখনই রাজ্যসভা থেকে সদ্য ইস্তফা দেওয়া কংগ্রেস নেতা ভুবনেশ্বর কলিতাকে দলে শামিল করেছে বিজেপি। ৩৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে কংগ্রেসের অবস্থানের বিরোধিতা করেই সাংসদ পদ ছাড়েন কলিতা। এ দিনের বৈঠকের আগে ঝাড়খণ্ডের কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দেন অজয় কুমার। রাহুল অবশ্য বৈঠকে বলেন, ‘‘আমি আছি। বিজেপি এবং আরএসএসের বিরুদ্ধে লড়ে যাব। নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ যে ভাষ্য তৈরি করছেন, তার মোকাবিলা করতে হবে।’’ ঘটনাচক্রে নিজের কেন্দ্র কেরলের ওয়ানাডের বন্যা নিয়ে সাহায্য চেয়ে আজই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন রাহুল।