রাহুল গাঁধী। ফাইল চিত্র।
‘এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড’ বা ইপিএফও-র সুদের হার ৮.১ শতাংশ করায় ক্ষোভের মুখে কেন্দ্র। আজ প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে তোপ দেগেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। শনিবার এক টুইটে রাহুলের কটাক্ষ, ‘বাড়ির ঠিকানা লোক কল্যাণ মার্গ রাখলেই লোকের কল্যাণ হয় না। মোদী সরকার ইপিএফের সুদ কমানোয় সিলমোহর দিয়ে ‘দাম বাড়াও, আয় কমাও’ নামে নতুন মডেল চালু করেছে।’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘দেশের প্রায় সাড়ে ৬ কোটি কর্মীর বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ধ্বংস করতে চলেছে এই মডেল।’ টুইটের সঙ্গে এই সুদের হার কমা সংক্রান্ত একটি সংবাদ বার্তাও পোস্ট করেছেন রাহুল।
প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের নাম ২০১৬ সালে ৭, রেস কোর্স রোড থেকে বদলে রাখা হয় লোক কল্যান মার্গ। আর সেই ‘লোক কল্যাণের’ বিষয়টিকে তুলে ধরেই আজ খোঁচা দিয়েছেন রাহুল। কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা সরকারের সমালোচনা করে নির্মীয়মান সেন্ট্রাল ভিস্টার দিকে ইঙ্গিত করেছেন। তিনি বলেন, “এই সব কাণ্ড দেখে সাহেব নিজেই লোক কল্যাণ মার্গ নামটি হজম করে উঠতে পারছেন না! আর তাই হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে ‘মোদী মহল’ বানাচ্ছেন!”
কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনায় মুখর হয়েছে সিপিএম, তৃণমূলের মতো অন্য বিরোধী দলগুলিও। তৃণমূলের তরফে টুইট করে বলা হয়েছে, “৮ বছরের লজ্জা!” দলের বক্তব্য, “ইপিএফ-এর সুদের হার একধাক্কায় কমানো হয়েছে। চল্লিশ বছরে সর্বনিম্ন এখন। আমরা ভাবতাম, ব্যস্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কী নিয়ে এত ব্যস্ত থাকেন? এখন বোঝা যাচ্ছে, একের পর এক যন্ত্রণার বোঝা মানুষের উপর চাপাতে।” পশ্চিমবঙ্গের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এক বিবৃতিতে বলেছেন, মোদী সরকার মানুষকে লুট করছে। কষ্টার্জিত সঞ্চয়েও কামড় বসাচ্ছে। ভ্রান্ত নীতি থেকে ব্যর্থ প্রশাসন— গত আট বছরে সবই দেখলাম। চূড়ান্ত হৃদয়হীন।
বিরোধীদের বক্তব্য, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক রেপো রেট বাড়ানোয় বাড়ি, গাড়ি কেনার জন্য যে টাকা মানুষ ঋণ নিয়েছেন, তার উপর সুদের পরিমাণ অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। এ দিকে ব্যাঙ্কে সঞ্চয়ের উপরে সুদ বা ইপিএফের উপর সুদ ক্রমশ কমছে। প্রশ্ন উঠছে, যে সব প্রবীণ সুদের উপর নির্ভর করে বেঁচে থাকেন, এ বার তাঁদের কী গতি হবে?
বিরোধীদের সমালোচনার মুখে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘অর্থনীতির সঙ্গে সঙ্গে সুদের হার কখনও বাড়ে, আবার কখনও কমে যায়। ইউক্রেন, রাশিয়ার যুদ্ধ এবং অন্যান্য পরিবেশে জন্য ভারতবর্ষ এমনকি গোটা পৃথিবী অর্থনৈতিক ডামাডোলের মধ্যে পড়েছে। তবে আমরা আশাবাদী আগামী দিনে আমাদের সরকার এই অর্থনৈতিক কিছুটা ভালো জায়গায় যাবে এবং সুদের হারও কিছুটা বাড়বে।’’ যার পাল্টা বিরোধীরা বলছেন, মোদী সরকারের ৮ বছরে পিএফ-সহ সব ধরনের সঞ্চয়ে সুদের হার ক্রমাগত কমেছে, কখনও বাড়েনি। ফলে সুকান্তর দাবি নেহাতই ভিত্তিহীন।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।