রাহুল গান্ধী। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
সংসদে বহিরাগতদের হানা নিয়ে প্রথম বার মুখ খুললেন রাহুল গান্ধী। মুখ খুলেই এই ঘটনায় সরাসরি নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে তোপ দাগলেন ওয়েনাড়ের কংগ্রেস সাংসদ।
শনিবার রাহুল দাবি করেন যে, দেশে বেকারত্বের জন্যই সংসদে নিরাপত্তা লঙ্ঘনের এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাচক্রে, দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সংসদে হানা দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, বেকারত্ব, মণিপুর হিংসা, কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই তাঁরা ক্যানিস্টার বা রংবোমা নিয়ে সংসদে গিয়েছিলেন।
শনিবার রাহুল বলেন, “মোদীর নীতির জন্য দেশের মানুষ কাজ পাচ্ছেন না। সংসদে নিরাপত্তা লঙ্ঘনের জন্য দায়ী বেকারত্ব।” তবে সংসদে নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনা যে ঘটেছে, তা মেনে নিয়েছেন রাহুল। তাঁর কথায়, “অবশ্যই নিরাপত্তা লঙ্ঘিত হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হল, এমন কেন হল? আসল কারণ হল বেকারত্ব। মোদীজির নীতির জন্য ভারতের জনগণ কাজ পাচ্ছেন না।” তবে রাহুল বেকারত্বকে মূল কারণ বলে চিহ্নিত করলেও মুদ্রাস্ফীতিকেও অন্যতম কারণ হিসাবে চিহ্নিত করেন।
অন্য দিকে, সংসদে রংবোমা নিয়ে হানা দেওয়ার ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শুক্রবারও বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলের সাংসদেরা। বিক্ষোভরত সাংসদেরা এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিবৃতি দাবি করেন। দফায় দফায় অশান্তির জেরে সোমবার পর্যন্ত মুলতুবি হয়ে গেছে লোকসভা এবং রাজ্যসভার অধিবেশন। আগামী ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংসদের বর্তমান শীতকালীন অধিবেশন চলার কথা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, শাহি-বিবৃতির দাবিতে এবং ১৫ বিরোধী সাংসদের সাসপেনশনের জেরে অধিবেশনের বাকি দিনগুলিতেও অশান্তির সম্ভাবনা থাকছে।
গত ২৮ মে বিপুল সমারোহে নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সেপ্টেম্বরে গণেশ চতুর্থী তিথিতে অধিবেশন শুরু হয়েছিল নতুন ভবনে। কিন্তু তার তিন মাসের মধ্যেই সুরক্ষার গুরুতর গাফিলতি দেখা গেল সেখানে। বুধবার তিন স্তরের সুরক্ষা বলয় টপকে কী ভাবে চার বিক্ষোভকারী গ্যাস-ক্যানিস্টার নিয়ে ভবনের সংরক্ষিত এলাকায় পৌঁছে গেলেন, এমনকি তাঁদের মধ্যে দু’জন লোকসভার অধিবেশনে ঢুকে দর্শক আসন থেকে ফ্লোরে ঝাঁপ মারার সুযোগ পেলেন, তা নিয়ে বৃহস্পতিবার লোকসভা এবং রাজ্যসভায় সরব হন বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সাংসদেরা। শাহের বিবৃতি দাবি করে সংসদের দু’কক্ষেই ওয়েলে নেমে স্লোগান তোলেন তাঁরা।