—ফাইল চিত্র।
দু’দিন আগে সরকার সংসদে জানিয়েছে, আন্দোলনে কৃষকদের মৃত্যুর তথ্য নেই তাদের কাছে। ক্ষতিপূরণেরও প্রশ্ন নেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তীব্র আক্রমণ করে কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী আজ সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “মোদীজির কাছে শুধু তাঁর বন্ধু শিল্পপতিদের নম্বর রয়েছে। আমাদের কাছে শহিদ কৃষকদের নাম এবং নম্বরও রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শুধু নিজের ভাবমূর্তি আর কুর্সি নিয়েই চিন্তিত। ওঁদের ঔদ্ধত্য সীমাহীন।”
আন্দোলনের সময় মারা যাওয়া পঞ্জাবের ৪০৩ জন কৃষকের নাম এবং ফোন নম্বরও সামনে এনেছেন রাহুল। সোমবার তিনি সংসদেও এই তালিকা পেশ করবেন। অন্যান্য রাজ্য থেকেও এমন আরও শ’খানেক মৃত কৃষকের তালিকা পাওয়া যাবে বলে তিনি জানান। রাহুলের বক্তব্য, পঞ্জাবের কংগ্রেস সরকার ‘শহিদ’ কৃষকদের তালিকা তৈরি করেছে। কৃষকদের মৃত্যুর জন্য পঞ্জাব সরকার দায়ী না হওয়া সত্ত্বেও প্রত্যেকের নিকটাত্মীয়কে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। চাকরি দিয়েছে ১৫২ জনকে। রাহুলের বক্তব্য, “এই ক্ষতিপূরণ যথেষ্ট নয়। ৭০০ জন কৃষকের পরিবার পিছু ২৫-৩০ লক্ষ টাকা দেওয়া এমন কিছু ব্যাপার নয়। প্রধানমন্ত্রী চাইলে দু’মিনিটে করতে পারেন।”
কৃষকদের ক্ষোভ নিরসনেই প্রধানমন্ত্রী তিনটি আইন প্রত্যাহার করতে হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমার যে ভাবে সংসদে মৃত কৃষকদের তথ্য না থাকার কথা বলেছেন ও ক্ষতিপূরণের প্রশ্ন উড়িয়ে দিয়েছেন, তা সেই ক্ষোভকে ফের জাগিয়ে তুলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। পঞ্জাব-উত্তরপ্রদেশে ভোটের আগে তা বিজেপি-বিরোধী শক্তিকে অক্সিজেন জোগাতে ও ভোটে ছাপ ফেলতে পারে বলেও অনেকের মত। রাহুল এই সুযোগটি কাজে লাগাতে তৎপর হন। তাঁর কথায়, “প্রধানমন্ত্রীকে যদি সত্যিই ক্ষমা চাইতে হয়, তা হলে এই পরিবারগুলির সমস্যা ও যন্ত্রণার কথা শুনুন। তাঁদের ক্ষতিপূরণ দিন।”
উত্তরপ্রদেশে বিজেপি তেমন সুবিধাজনক অবস্থায় নেই বুঝেই তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করেছেন মোদী। কিন্তু কৃষকরা ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইনি নিশ্চিয়তা, আন্দোলনে মৃত ৭০০ কৃষকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও লখিমপুর খেরি কাণ্ডে অভিযুক্ত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় টেনির অপসারণের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। কৃষকদের বিরুদ্ধে করা কয়েকশো ভুয়ো মামলা প্রত্যাহারেরও দাবি তুলেছে সংযুক্ত কিসান মোর্চা। কংগ্রেস-সহ বিরোধীরাও নিজেদের মতো করে চাপ বাড়াচ্ছে মোদীর সরকারের উপরে।