—প্রতীকী ছবি।
নরেন্দ্র মোদী কেন্দ্রীয় সরকারের উচ্চপদে আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের নিয়োগ করছে বলে অভিযোগ তুললেন রাহুল গান্ধী। শনিবারই কেন্দ্রীয় সরকারের যুগ্ম-সচিব ও অধিকর্তা পদে ৪৫ জনকে সরাসরি নিয়োগের বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে। এই সব পদে সংরক্ষণের সুযোগ না দিয়ে সংবিধানের লঙ্ঘন হচ্ছে বলে রাহুলের অভিযোগ। কর্পোরেট বা শিক্ষা জগৎ থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগের জন্যই এই সিদ্ধান্ত বলে মোদী সরকার যুক্তি দিয়েছে। রাহুল গান্ধীর বক্তব্য, “কিছু কর্পোরেটের প্রতিনিধিরা গুরুত্বপূর্ণ সরকারি পদে বসে কী কেরামতি দেখাবেন, তার জ্বলন্ত উদাহরণ সেবি। যেখানে বেসরকারি ক্ষেত্র থেকে আসা কাউকে প্রথম বার চেয়ারপার্সন হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে।”
সম্প্রতি সেবি-র প্রধান মাধবী পুরী বুচের বিরুদ্ধে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার দর কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। মাধবী কর্পোরেট জগত থেকে সেবি-তে যোগ দিয়েছিলেন। তিনিই প্রথম কর্পোরেট জগত থেকে আসা সেবি-প্রধান। আজ রাহুল গান্ধী সে দিকেই আঙুল তুলেছেন। শনিবার ইউপিএসসি যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, তাতে ৪৫টি সরকারি উচ্চপদে বেসরকারি ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদী ইউপিএসসি-র জায়গায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের মাধ্যমে নিয়োগ করে সংবিধানের উপরে আক্রমণ করছেন। কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ত্রকের গুরুত্বপূর্ণ পদে সরাসরি নিয়োগ করে খোলাখুলি তফসিলি জাতি, জনজাতি, ওবিসিদের সংরক্ষণ ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে। রাহুল বলেন, “আমি আগেই বলেছি, আমলাতন্ত্রের শীর্ষপদে বঞ্চিত, অনগ্রসরদের প্রতিনিধিত্ব নেই। তা শোধরানোর বদলে বঞ্চিত, অনগ্রসরদের আরও দূরে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ইউপিএসসি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া তরুণদের অধিকারে ডাকাতি হচ্ছে। বঞ্চিতদের জন্য সংরক্ষণের মাধ্যমে সামাজিক ন্যায়ের পরিকল্পনায় এটা আঘাত। আইএএস-এর বেসরকারিকরণ করে সংরক্ষণ শেষ করাটাই মোদীর গ্যারান্টি। ইন্ডিয়া জোট এর বিরোধিতা করবে।’’ কংগ্রেস সূত্রের খবর, ২৬ অগস্ট প্রয়াগরাজে ‘সংবিধান সম্মান সম্মেলনে’ এ নিয়ে সরব হবেন রাহুল।
মোদী সরকারের যুক্তি, সরকারের কিছু পদে বিশেষজ্ঞদের অনেক দিন ধরেই সরকার নিয়োগ করছে। তাতে আর কেউ বঞ্চিত অনুভব করছে না। নীতি আয়োগের প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ রাজীব কুমারের যুক্তি, “আমি ১৯৯১ সালে পেশাদার হিসেবে অর্থ মন্ত্রকের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছি। তার পরে ২০১৭-য় নীতি আয়োগের উপাধ্যক্ষ হিসেবে কাজ করেছি। তার জন্য আর কারও মনোবল নষ্ট হতে দেখিনি।” সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির যুক্তি, ইউপিএসসি-র মাধ্যমে সাধারণ প্রক্রিয়া মেনে নিয়োগ হলে এই ৪৫টি পদের মধ্যে ২৩টি পদে এসসি, এসটি, ওবিসি-র যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ
করা হত।