Rahul Gandhi

পদবি-মামলায় সোমবার উচ্চতর আদালতে রাহুল

২০১৯ সালে কর্নাটকে ভোটের প্রচারে ‘সব চোরেদের পদবি মোদী কেন’ প্রশ্ন তোলার বিরুদ্ধে গুজরাতের বিজেপি নেতা পূর্ণেশ মোদী সুরাতের আদালতে মামলা করেছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৩ ০৬:৪১
Share:

ফাইল চিত্র।

সাংসদ পদ খারিজকে হাতিয়ার করে রাহুল গান্ধী তথা কংগ্রেস সব বিরোধীদের এককাট্টা করছে দেখে বিজেপি নেতারাই প্রশ্ন তুলছিলেন, রাহুল উচ্চতর আদালতে কবে যাবেন?

Advertisement

কংগ্রেসের অন্দরমহলে প্রশ্ন উঠছিল, দলের বিখ্যাত আইনজীবী নেতারা রাহুল গান্ধীর হয়ে মামলা করতে এত দেরি করছেন কেন!

কংগ্রেস সূত্রের খবর, সব ঠিক থাকলে সোমবারই রাহুল গান্ধী সুরাতের ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুরাতের দায়রা আদালত বা সেশনস কোর্টে মামলা করতে চলেছেন। ২০১৯ সালে কর্নাটকে ভোটের প্রচারে ‘সব চোরেদের পদবি মোদী কেন’ প্রশ্ন তোলার বিরুদ্ধে গুজরাতের বিজেপি নেতা পূর্ণেশ মোদী সুরাতের আদালতে মামলা করেছিলেন। সেই মানহানির ফৌজদারি মামলার অপরাধে সুরাতের ম্যাজিস্ট্রেট আদালত রাহুলকে দু’বছরের কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছিল। একই ভাবে বিহারের বিজেপি নেতা সুশীল মোদীও পটনার সাংসদ-বিধায়কদের বিরুদ্ধে মামলার বিশেষ আদালতে রাহুলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছিলেন। সেই আদালত থেকে নোটিস পাঠিয়ে রাহুলকে ১২ এপ্রিল হাজির হতে বলা হয়েছে। সুশীল কুমার মোদীরও অভিযোগ ছিল, রাহুল মোদী-পদবিধারী সকলকে অপমান করেছেন।

Advertisement

সুরাতের আদালতের রায়ের জেরেই রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ হয়ে গিয়েছে। তার পরেই কংগ্রেস ঘোষণা করেছিল, উচ্চতর আদালতে আর্জি জানানো হবে। কিন্তু এক সপ্তাহ কেটে গেলেও তা হয়নি। যা নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, একদিকে সব দিক বেঁধে মামলা করা হচ্ছে। অন্য দিকে এই সময়টিকে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতেও কাজে লাগানো হয়েছে।

সুরাতের দায়রা আদালতে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের রায়ে স্থগিতাদেশ মিলবে বলে কংগ্রেস নেতারা নিশ্চিন্ত। তাঁদের বক্তব্য, প্রথমেই সুরাতের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলা হবে। কারণ রাহুল কর্নাটকে বক্তৃতা করেছিলেন, একেবারে অন্য রাজ্যে। রাহুলের বক্তৃতার ৯০ শতাংশ অংশেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল। মানহানির মামলা করলে নরেন্দ্র মোদীর করা উচিত। গুজরাতের বিজেপি বিধায়ক পূর্ণেশ মোদী মামলা করতে পারেন না। যদি সব মোদীকে রাহুল অপমান করেছেন বলে ধরে নেওয়া যায়, তা হলেও পূর্ণেশ অভিযোগ জানাতে পারেন না। কারণ তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যক্তিগত নিশানা করা হয়নি। রাহুল নির্দিষ্ট করে মোদী সম্প্রদায়কে নিশানা করেননি। মোদী সম্প্রদায় বলে কোনও নির্দিষ্ট সম্প্রদায় নেই। কারণ গুজরাতে হিন্দু, মুসলিম, পার্সি, অনেকেই মোদী পদবি ব্যবহার করেন। তাঁরা সকলে এক ধর্মের, এক জাতির প্রতিনিধি নন। কেন মানহানির মামলায় সর্বোচ্চ সাজা দু’বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হবে।

কংগ্রেসের অন্দরে প্রশ্ন, দলের মুখপাত্র পবন খেরাকে দিল্লি ও অসম পুলিশ গ্রেফতার করার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর জামিনের জন্য সুপ্রিম কোর্টে মামলা করা হয়েছিল। রাহুলের ক্ষেত্রে দেরি কেন? কংগ্রেস নেতাদের ব্যাখ্যা, পবনের ক্ষেত্রে শুধু এফআইআর হয়েছিল। রাহুলের ক্ষেত্রে মামলার পুরো শুনানি হয়ে সাজা ঘোষণা হয়েছে। সেই রায় গুজরাতিতে লেখা। সব দিক দেখে মামলা করা হচ্ছে। যাতে রাহুলকে ভবিষ্যতে হেনস্থার মুখে পড়তে না হয়।

দু’দিন আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অভিযোগ তুলেছিলেন, রাহুল সাংসদ থাকতে চান। কিন্তু তিনি এতই অহঙ্কারী যে উচ্চতর আদালতে মামলা করছেন না। আজ বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা অভিযোগ তুলেছেন, ‘‘কংগ্রেস ওবিসি-দের অপমান করেছে। রাহুল গান্ধী এর জন্য ক্ষমাও চাননি। ওবিসি সম্প্রদায় তথা দেশের মানুষ রাহুলকে ক্ষমাকরবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement