রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।
তিনি নয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই বিদেশে ভারতের বদনাম করেছেন বলে দাবি করলেন রাহুল গান্ধী।
চলতি ব্রিটেন সফরের সময়ে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে নরেন্দ্র মোদী জমানায় ভারতে গণতন্ত্রের সঙ্কট নিয়ে সরব হন রাহুল। তার পরেই বিজেপি দাবি করে, বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে ভারতের ভাবমূর্তিকে কালিমালিপ্ত করে চলেছেন রাহুল।
আজ লন্ডনে এক সাংবাদিক বৈঠকে রাহুল দাবি করেন, ‘‘আমি নয়, বিদেশে ভারতের বদনাম করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি দাবি করেছিলেন ভারতে ৭০ বছরে কোনও কাজ হয়নি। এটা ভারতের অপমান। যাঁরা ভারত গড়ার কাজ করেছেন তাঁদের কথা কি সম্পূর্ণ ভুলেযেতে হবে?’’
রাহুলের বক্তব্য, ‘‘ভারতের বিরোধী দলগুলি আর রাজনৈতিক লড়াই লড়ছে না। আমরা এখন ভারতের প্রতিষ্ঠানগুলির বিরুদ্ধে লড়ছি। সমানে সমানে লড়াই হচ্ছে না। আরএসএস ও বিজেপির হাতে থাকা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে।’’ বিরোধী ঐক্য কী ভাবে সামাল দেবেন তিনি? তৃণমূল কংগ্রেস তো ইতিমধ্যেই পরের লোকসভা ভোটে একা লড়ার কথা ঘোষণা করেছে। রাহুলের বক্তব্য, ‘‘ওটা এখন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের সমস্যা, আমার নয়। তিনি বিরোধী দলগুলিকে এক মঞ্চে আনার কাজ করছেন।’’
ভারতে প্রচারের আলো সব সময়েই বিজেপির উপরে। এবং তা সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যমের দৌলতে। কংগ্রেস সেখানে পিছিয়ে পড়ছে কেন? রাহুলের দাবি, ‘‘ভারত জোড়ো যাত্রার মাধ্যমে প্রচারের আলো কেড়ে নিতে পেরেছি আমরা। ভারত জোড়ো ছিল একটি ভাবনা। মূল ভাবনাটি সব বিজেপি-বিরোধী দলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে।’’
রাহুলের মতে, মোদীকে নিয়ে বিবিসি-র তথ্যচিত্র বা আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, যে কোনও সমালোচনাকেই ভারত-বিরোধী তকমা দেওয়া হচ্ছে।
দেশের সম্পদকে মোদী সরকার আদানি ও অন্য তিন-চার জনের হাতে তুলে দিচ্ছে বলে দাবি রাহুলের। তাঁর মতে, এর ফলে ধ্বংস হচ্ছে ছোট ও মাঝারি শিল্প। কাশ্মীরে সম্প্রতি পাওয়া লিথিয়ামের ভান্ডারও আদানির হাতে যাবে বলে ধারণা তাঁর। তবে সেই সঙ্গে রাহুলের বক্তব্য, ‘‘দেশে বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভের স্রোত বইছে। সাংবাদিকদের চুপ করিয়ে, তাঁদের ফোনে আড়ি পেতে ভারতকে চুপ করিয়ে রাখতে চাইছে বিজেপি। দেশবাসীর মন অন্য দিকে ঘুরিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
চিন প্রসঙ্গেও মোদী সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন রাহুল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ভারতের ২ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা চিনা সেনা দখল করে বসে আছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বলছেন ভারতের এক ইঞ্চি জমিও কারও দখলে নেই।’’
এ দিন পশ্চিমি গণতান্ত্রিক দেশগুলিকেও এক হাত নিয়েছেন রাহুল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ভারতে গণতন্ত্রের একাংশ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তা নিয়ে গণতন্ত্রের তথাকথিত রক্ষকেরা কোনও উচ্চবাচ্যই করছে না। এতে আমি বিস্মিত।’’