বন্ধু যদি না-ই হন, তদন্ত নয় কেন’, সংসদে মোদীর আদানি-নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন রাহুল। ফাইল চিত্র।
সংসদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বক্তৃতার পরেই এ বার এই বিষয়ে মুখ খুললেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। মোদীকে কটাক্ষ করে রাহুলের দাবি, প্রধানমন্ত্রী চমকে গিয়েছেন। তাঁর কথায় সত্যিটা ধরা পড়ে গিয়েছে।
মঙ্গলবারই সংসদে মুখ খুলে শিল্পপতি গৌতম আদানির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাহুল। বৃহস্পতিবার জবাবি ভাষণে রাহুলের নাম না করেই তাঁকে ‘হতাশাগ্রস্ত নেতা’ বলে কটাক্ষ করেন মোদী। প্রধানমন্ত্রীর নিশানায় ছিল কংগ্রেস, ইউপিএ আমলের দশ বছরও। মোদীর বক্তব্যের মাঝপথেই সংসদে ঢোকেন রাহুল। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শেষ হওয়ার পর সংসদের বাইরে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে রাহুল বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে আমি সন্তুষ্ট হতে পারিনি। উনি কোনও তদন্তের কথা বলেননি।” মোদীর সঙ্গে আদানির সম্পর্কের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “তাঁরা যদি বন্ধু না হয়ে থাকেন, তবে প্রধানমন্ত্রীর তদন্তের নির্দেশ দেওয়া উচিত ছিল।” প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বেনামী অ্যাকাউন্ট থেকে যে টাকা ছড়ানো হচ্ছে, তা নিয়েও প্রধানমন্ত্রী নীরব কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ওয়েনাডের সাংসদ। দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আদানি গোষ্ঠীর বিনিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাহুল বলেন, “এটা জাতীয় নিরাপত্তারও প্রশ্ন। প্রধানমন্ত্রীর উচিত ছিল এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি কেন তিনি সেই নির্দেশ দেননি।”
বুধবার ঝাড়া ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট লোকসভায় ভাষণ দিয়ে গেলেও ‘আদানি’ শব্দটি এক বারের জন্যও উচ্চারণ করেননি মোদী। উল্টে ‘দুর্নীতি’র তির ঘুরিয়ে দেন কেন্দ্রের কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের দিকে। আদানি বিতর্কে কেন্দ্রীয় সরকারের অবস্থান স্পষ্ট। ওই শিল্পগোষ্ঠী সম্পর্কে যা পদক্ষেপ করার তা করবে ‘নিয়ামক সংস্থা’। বিজেপির দলগত অবস্থানও তাই। কিন্তু বিরোধীদের আক্রমণ চলছেই। প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে গুজরাতি শিল্পপতি গৌতম আদানির সম্পর্ক ঠিক কী, তা নিয়ে মঙ্গলবার লোকসভায় প্রশ্ন তুলেছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। বুধবার লোকসভায় রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর ধন্যবাদজ্ঞাপন ভাষণ দিতে প্রধানমন্ত্রী যখন উঠলেন, তখনই বিরোধী বেঞ্চ থেকে আওয়াজ উঠতে শুরু করল, ‘আদানি! আদানি!’ কিন্তু এক বারের জন্যও নরম হননি মোদী। তাঁর ভাষণ শেষের পর বিরোধী বেঞ্চে বসে-থাকা রাহুলকেও টেবিল চাপড়াতে দেখা গেল। মুখে মৃদু হাসি। সমবেত আদানি-দাবির মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী প্রসঙ্গটি এড়িয়ে যাওয়ায় রাহুলের সে হাসি ব্যঙ্গাত্মক নাকি প্রশংসাসূচক, তা রাহুল ছাড়া আর কারওরই বোঝার সাধ্য নেই।