কেরলে রাহুল গাঁধী। কর্নাটকের আকাশে অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই।
লাগাতার বৃষ্টির হাত থেকে কিছুটা হলেও রেহাই মিলেছে। কিন্তু কেরলে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির কোনও লক্ষণ নেই। রবিবারই তিনটি দেহ উদ্ধার হয়েছে সেখানে। গত তিন দিনে এই নিয়ে ৬৭ জনের মৃত্যু হল সেখানে। ঘরছাড়া মানুষের সংখ্যা ইতিমধ্যেই দেড় লক্ষ ছাড়িয়েছে। পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে পড়শি রাজ্য কর্নাটকেও। সেখানে চার লক্ষের বেশি মানুষ ঘরছাড়া।
কেরলের ওয়েনাড, কান্নুর এবং কাসারগোড-এই তিন জেলায় রবিবারও লাল সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন জানিয়েছেন, সব মিলিয়ে ১ হাজার ৩১৮টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন ৪৬ হাজার ৪০০ পরিবারের ১ লক্ষ ৬৫ হাজার ৫১৯ জন সদস্য। ওয়েনাড, মলপ্পুরম-সহ একাধিক জায়গায় আরও বহু মানুষ আটকে রয়েছেন। গত তিন দিনে আটটি জেলা থেকে ৮০টির বেশি ধস নামার ঘটনা সামনে এসেছে বলেও জানান তিনি। এখনও পর্যন্ত কেরলের জন্য অর্থ সাহায্যের আবেদন করেননি পিনারাই বিজয়ন। তবে তাঁর অভিযোগ, ত্রাণ তহবিলে দান করা থেকে মানুষকে বিরত রাখতে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার চালাচ্ছে কিছু গোষ্ঠী। সমস্ত রাজনৈতিক দলের উচিত এর বিরোধিতা করা।
কেরলের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আগেই প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চেয়েছিলেন ওয়েনাডের সাংসদ তথা কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। দু’দিনের সফরে তিনি নিজেই এ দিন কোঝিকোড় পৌঁছে গিয়েছেন। নীলাম্বুর, মাম্পদ এবং এডভান্নাপ্পাড়া-সহ বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরগুলি ঘুরে দেখবেন তিনি। মলপ্পুরমের জেলাশাসকের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠকের পরিকল্পনাও রয়েছে তাঁর।
আরও পড়ুন: মোদী-শাহ যেন ‘কৃষ্ণার্জুন’, কাশ্মীর-সিদ্ধান্ত নিয়ে মন্তব্য রজনীকান্তের
অন্য দিকে, পড়শি রাজ্য কর্নাটকের পরিস্থিতিও যথেষ্ট উদ্বেগজনক। কমপক্ষে ৩০ জন প্রাণ হারিয়েছেন সেখানে। ঘরছাড়া চার লক্ষের বেশি মানুষ। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেলাগাভি। সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে চেপে এ দিনই সেখানকার পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশীও। রাজ্য সরকারকে সব রকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ৩৭০ রদ হওয়ায় শেষ হবে সন্ত্রাসবাদ, উন্নয়ন হবে কাশ্মীরে, বার্তা অমিত শাহের
এর আগে, শনিবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন ইয়েদুরাপ্পা। তিনি জানান, কর্নাটকের ১৭টি জেলার প্রায় এক হাজার গ্রাম এখনও জলমগ্ন। যান চলাচল বন্ধ রয়েছে মুম্বই ও বেঙ্গালুরুর মধ্যে সংযোগকারী ৪ নম্বর জাতীয় সড়কও। ওই পথে মুম্বই থেকে কোনও গাড়ি কর্নাটকে ঢুকতে পারছে না। সোলাপুর হয়ে ঘুরে আসতে হচ্ছে সকলকে। বন্যার কবলে সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছ’হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে বলেও জানান তিনি।