অনন্ত অম্বানী এবং রাধিকা মার্চেন্ট। —ফাইল চিত্র।
দেশের ধনীতম শিল্পপতি মুকেশ অম্বানীর ছেলে অনন্ত এবং শিল্পপতি বীরেন মার্চেন্টের মেয়ে রাধিকার প্রাক্-বিবাহ অনুষ্ঠান হচ্ছে গুজরাতের জামনগরে। সেখানে আসা দেশি-বিদেশি ‘ভিভিআইপি’ অতিথিদের সুবিধার জন্য জামনগরে সেনার বিমানবন্দরটিকে ১০ দিনের জন্য ‘আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’-এর তকমা দিয়েছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার। এমনকি ভারতীয় বায়ুসেনার ‘টেকনিক্যাল এরিয়া’ও ব্যবহার করতে পারবে অতিথিদের বিমান। বিমানবন্দরের যাত্রী বিভাগটির আয়তন বাড়ানো, শৌচাগারগুলির ব্যাপক সংস্কার-সহ একাধিক উন্নয়নের কাজও করা হয়েছে। চালু করা হয়েছে কাস্টমস, ইমিগ্রেশন বিভাগ।
এই প্রাক্-বিবাহ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের মধ্যে রয়েছেন পপ গায়িকা রিহানা, ডোনাল্ড ট্রাম্পের কন্যা ইভাঙ্কা, মাইক্রোসফ্টের বিল গেটস-সহ অনেকে। বলিউডের একাধিক চিত্রতারকাও আমন্ত্রিত এই অনুষ্ঠানে। ফলে জামনগর এখন দেশের অন্যতম ব্যস্ত বিমানবন্দর। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, গড়ে যে বিমানবন্দরে রোজ ৬টি বিমান ওঠানামা করে, শুধু মাত্র শুক্রবার সেখানে প্রায় ১৪০টি বিমান অবতরণ করেছে। তার মধ্যে বেশির ভাগই চার্টার্ড বিমান। যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে বিমানবন্দরে কর্মীর সংখ্যা বাড়িয়ে ১০০ করা হয়েছে। পাশাপাশি জামনগর পুলিশের এক বড় বাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে।
জামনগর বিমানবন্দরটির কাছেই পাকিস্তান সীমান্ত। বায়ুসেনার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই বিমানবন্দরটিকে এ ভাবে অসামরিক কারণে খুলে দেওয়া নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি যে ভাবে একজন শিল্পপতির পরিবারের অনুষ্ঠানের জন্য করদাতাদের টাকায় বিমানবন্দরের ভোল বদলানো হয়েছে, তার কড়া সমালোচনা করেছে বিরোধীরা।
কংগ্রেস মুখপাত্র জয়রাম রমেশ এক্স-হ্যান্ডলে কটাক্ষের সুরে লিখেছেন, ‘‘পুঁজিপতি বন্ধুদের সাহায্য করার জন্য প্রদানমন্ত্রী মোদী যে কোনও কাজ করে দিতে পারেন।’’ তার পরেই বিমানবন্দরের পরিবর্তন নিয়ে আক্রমণ শানিয়ে বলেছেন, করদাতাদের টাকায় এ কাজ করা হয়েছে। পাশাপাশি শিল্পপতিদের সঙ্গে মোদীর সম্পর্ক তুলে ধরে রমেশ লিখেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী তাঁর পুরো রাজনৈতিক জীবন নিজের কোটিপতি বন্ধুদের সাহায্য করার জন্য ব্যয় করেছেন। যেমন বেসরকারি হাতে চলে যাওয়া ৬টি বিমানবন্দরের মধ্যে পাঁচটি যাতে আদানি গোষ্ঠী পায়, তা সুনিশ্চিত করেছেন। একই ভাবে মাত্র দু’টি সংস্থাকে ভারতীয় বিমানক্ষেত্রের ৯০ শতাংশ হাতে তুলে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন এবং কর্পোরেটদের সাড়ে ১৪ লক্ষ কোটি টকা ঋণ মকুব করে দিয়েছেন।’’ কংগ্রেসের বক্তব্য, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে জামনগর বিমানঘাঁটির অবস্থান যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। সেটিকে এ ভাবে খুলে দিয়ে দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করছেন মোদী।