টাইমস স্কোয়ার। ফাইল চিত্র।
অযোধ্যায় রামমন্দিরের শিলান্যাসের দিনে প্রসাদী লাড্ডু পাবে নিউ ইয়র্কও! সেখানকার দুনিয়াখ্যাত টাইমস স্কোয়ারের বিজ্ঞাপনের বিলবোর্ডে ওই দিন থাকবেন ধনুকধারী রাম। ভেসে উঠবে রামমন্দিরের প্রস্তাবিত নকশাও। কিছু দিন আগেই যেখানে ভেসে উঠেছিল মোহনবাগানের নামও।
নিউ জার্সি, অস্টিন, টেক্সাস, সান ফ্রান্সিসকো, বস্টন, শিকাগো, ফ্লরিডা, হিউস্টন থেকে শুরু করে প্রায় সমস্ত বড় শহরে বহু অনাবাসীর বাড়িতেও সে দিন থাকবে উৎসবের আমেজ। অনাবাসী বাঙালিদের সংগঠন এনআরআইজ ফর বেঙ্গলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা যুধাজিৎ সেন মজুমদারের কথায়, “মঙ্গলবার সন্ধ্যাতেই প্রদীপ জ্বলবে বহু অনাবাসীর বাড়িতে। ভূমি পূজার সময়ে রাম নাম করা হবে হাজার পাঁচেক মন্দিরে। টাইমস স্কোয়ারে নেওয়া হবে তিনটি বিলবোর্ড।” হাজার পনেরো ডলার দিয়ে বিলবোর্ডের ‘দখল নেওয়া’ থেকে শুরু করে মিষ্টি বিতরণ পর্যন্ত পুরো অনুষ্ঠানের পিছনে রয়েছে আমেরিকার রাম জন্মভূমি শিলান্যাস কমিটি। হাত রয়েছে প্রায় হাজার পাঁচেক মন্দির পরিচালনার দায়িত্বে থাকা হিন্দু মন্দির এগজিকিউটিভ কমিটি এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মার্কিন শাখারও।
যদিও তাতে আপত্তি জানিয়েছেন অনাবাসী ভারতীয়দের আর এক অংশ। তাঁদের মতে, এই অনুষ্ঠান ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার মূলে কুঠারাঘাত। এ ক্ষেত্রে অনুমতি না-দিতে নিউ ইয়র্ক সিটি কাউন্সিলে এ জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। নিউ ইয়র্কের মেয়রের কাছেও সই সংগ্রহ করে আপত্তি জানাতে চলেছে ইন্ডিয়া সিভিল ওয়াচ নামে একটি সংগঠন। যে ভাবে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছিল, তা পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে মেয়রকে জানাচ্ছে তারা।
কিন্তু যুধাজিৎদের দাবি, এর পিছনে মদত রয়েছে পাক এবং চিনা দূতাবাসের। তাঁদের কথায়, হিন্দু তথা দেশের আবেগ জড়িত বলেই এর সঙ্গে জড়িয়েছেন এত বাঙালি। যাঁদের কেউ গুগলে কাজ করেন, তো কেউ নাসার কর্মী। যদিও প্রশ্ন, এমন গবেষণামূলক বাঘা প্রতিষ্ঠানে কাজ করা ব্যক্তিরা যেখানে জড়িত, সেখানে আমন্ত্রণপত্রে করোনা তাড়াতে হনুমান চল্লিশা পড়ার কথা বলা হয় কী ভাবে!
বিতর্কে দেশের দূরদর্শনও। বিপুল দরে বিলবোর্ড ভাড়া দিয়ে ডলার পাবে নিউ ইয়র্কের সংস্থা। এ দেশের বহু বেসরকারি চ্যানেলও চড়া টিআরপি-র জন্য শিলান্যাসের অনুষ্ঠান দেখাবে সরাসরি। কিন্তু সরকারি চ্যানেল দূরদর্শন কেন এমন এক আপাদমস্তক ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সাড়ম্বর সম্প্রচার করবে, তা ঘিরে বিতর্ক দানা বেঁধেছে ইতিমধ্যেই।