—প্রতীকী চিত্র।
যৌন পরিচয়ে তিনি ‘কুইয়্যার’ গোষ্ঠীভুক্ত। অর্থাৎ প্রান্তিক যৌন অভিরুচির এক জন মানুষ। পরিবারের থেকে আলাদা হয়ে পছন্দের মানুষের সঙ্গে ‘লিভ ইন’ সম্পর্কে ছিলেন। সেই একত্রবাস সঙ্গীর মৃত্যু হয়েছিল ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে। মৃতের পরিবারের সদস্যরা দেহ নিতে অস্বীকার করেছিলেন। দেহ পাওয়ার অধিকার চেয়ে এ বার আদালতের দ্বারস্থ হলেন তাঁর একত্রবাস সঙ্গী।
ঘটনাটি কেরলের কোচির। জেবিন নামে ‘কুইয়্যার’ গোষ্ঠীভুক্ত ওই ব্যক্তি তার সঙ্গী মনুর সঙ্গে কোচিতে একত্রবাস করতেন। গত ২ ফেব্রুয়ারি মনু বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে যান। তাঁকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
দু’দিন ভেন্টিলেটর সাপোর্টে থাকার পর ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে মারা যান মনু। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর পরিবার চিকিৎসার খরচ বহন করতে অস্বীকার তো করে বটেই, সেই সঙ্গে তাঁরা মনুর মৃতদেহ নিতেও রাজি হননি। অন্য দিকে, একত্রবাস সঙ্গী জেবিন আইনি মতে ‘উত্তরাধিকারী’ না হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও তাঁকে মনুর মৃতদেহ হস্তান্তর করতে রাজি হননি।
এর পরেই সঙ্গীর দেহের অধিকার চেয়ে জেবিন হাই কোর্টে আবেদন করেন। কেরলের প্রথম রুপান্তরকামী আইনজীবী পদ্মা লক্ষ্মী এই মামলায় জেবিনের হয়ে সওয়াল করেন। তিনি বলেন, ‘‘এটা প্রান্তিক যৌন অভিরুচির মানুষের অধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত, এবং সমস্ত ধর্মীয় নিয়ম মেনে শেষকৃত্য হওয়ার অধিকার মনুর রয়েছে।’’ হাইকোর্ট সঙ্গে সঙ্গে আবেদনটি পর্যালোচনা করে ই-মেল মারফত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে একটি নোটিস পাঠায়। গত ৬ ফেব্রুয়ারি শুনানির সময় দাবিহীন মৃতদেহগুলির জন্য কী নিয়ম রয়েছে, তা সম্পর্কে সরকারের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে পাঠায় আদালত।
নিয়ম অনুযায়ী, যদি পরিবারের সদস্য বা আইনি উত্তরাধিকারীরা মৃতদেহ দাবি না করেন, তখন তা চিকিৎসা-গবেষণার জন্য কোনও সরকারি মেডিকেল কলেজের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে হাই কোর্টে এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। সেই সময় পরিবারের একজন সদস্যকে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।