হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথনের এই ছবি সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন ওই কর্মী। ছবি: সংগৃহীত।
রাখির দিন ছুটি নিলে কর্মীদের সাত দিনের বেতন কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এক বেসরকারি সংস্থা। সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে আপত্তি তোলায় বরখাস্ত হতে হল সংস্থার এক মানবসম্পদ কর্মীকে। সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে সংস্থাটির বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ জানিয়েছেন বরখাস্ত হওয়া কর্মী নিজেই। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বেসরকারি সংস্থাটি। পোস্টের নীচে তারা লিখেছে, ওই মহিলা কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে তাঁর কাজে অদক্ষতার জন্য। সংস্থাটি অভিযোগ করেছে, ওই মহিলা তাঁর কাজের সময়ে মেয়ের স্কুলের হোমওয়ার্ক করতেন। কখনও কখনও সেই ছুতোয় প্রায় দু’ঘণ্টা কাজ বন্ধ রাখতেন তিনি।
ঘটনাটি ঘটেছে পঞ্জাবের লুধিয়ানায়।দু’পক্ষের অভিযোগের সত্যাসত্য যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। তবে লিঙ্কডইন নামে সমাজমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মে ওই পোস্টটি ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। কর্পোরেট কর্মীদের অনেকেই নিজেদের মতামত জানিয়েছেন ওই পোস্টের নীচে। কেউ ওই কর্মীকে সমর্থন করেছেন। কেউ আবার সংস্থার সিদ্ধান্তকেই ‘ঠিক’ বলে মন্তব্য করেছেন।
কী অভিযোগ করেছিলেন মহিলা?
মহিলা কর্মী তাঁর প্রাক্তন ‘বস’-এর সঙ্গে একটি হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথনের স্ক্রিনশট পোস্ট করেছেন। তাতে লেখা রয়েছে, ‘‘১৫ অগস্ট অফিস বন্ধ থাকবে। তার চার দিন পরে ১৯ অগস্ট রাখির দিন অর্ধদিবস ছুটির ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু কেউ ওই দিন চাইলেও পুরো ছুটি নিতে পারবেন না। সংস্থার তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ওই দিন অফিসে হাজির থাকা বাধ্যতামূলক। যদি কেউ ওই দিন অফিসে না আসেন, তবে তাঁর সাত দিনের বেতন কাটা যাবে। যদি কারও এই সিদ্ধান্তে আপত্তি থাকে, তবে তিনি বিনাদ্বিধায় তাঁর ইস্তফাপত্রটি জমা দিতে পারেন।’’ ওই বরখাস্ত হওয়া মহিলা কর্মী লিখেছেন, ‘‘আইনত যা সমর্থনযোগ্য নয়, তার বিরুদ্ধে কথা বলেছিলাম। পুরস্কার হিসাবে হাতে পেলাম বরখাস্তের চিঠি। আমাকে হিসাব মতো দু’সপ্তাহের সময় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সংস্থার তরফে আমার কাজ করার সমস্ত উপায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যাতে আমি কোনও ভাবেই কর্মক্ষেত্রে আর না থাকতে পারি।’’
সংস্থা কী বলেছে?
মহিলা কর্মীর পোস্টের নীচে ওই সংস্থাটি লিখেছে, নিজেকে সমস্ত অত্যাচারের শিকার বলে দেখানো অত্যন্ত সহজ। এক পক্ষের কথা শুনে পরিস্থিতির বিচার করাও সহজ। কিন্তু যেটা উনি বলেননি এবং যেটা কেউ জানেন না, তা হল ওই মহিলা কর্মক্ষেত্রে সর্বক্ষণই ফোনে কথা বলতেন। বহু বার সতর্ক করা সত্ত্বেও তিনি অভ্যাস বদলাননি। সংস্থার তরফে তাঁকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তা তো তিনি পালন করেনইনি। উল্টে অফিসে কাজের সময়ে তিনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা মেয়ের স্কুলের হোমওয়ার্ক করে যেতেন।
নেটাগরিকেরা কী বলছেন?
নেটাগরিকেদের অধিকাংশই দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরেও ওই মহিলাকেই সমর্থন করেছেন। তাঁকে শ্রম আদালতে মামলা করার পরামর্শও দিয়েছেন অনেকে।