ছবিছ পিটিআই।
কৃষি আইন নিয়ে মোদী সরকারের সঙ্গে পঞ্জাব সরকারের বিরোধ এ বার দিল্লির ময়দানে এসে পড়ল।
মোদী সরকার পঞ্জাবের সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ করছে এই অভিযোগ তুলে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ দিল্লিতে এসে ধর্না দিলেন। কেন্দ্রের কৃষি আইন নাকচ করে অমরেন্দ্র পঞ্জাবের বিধানসভায় নিজস্ব বিল পাশ করিয়েছেন। কিন্তু রাজ্যপাল বিজেন্দ্রপাল সিংহ বদনৌর এখনও তাতে সই করেননি। এ বিষয়ে অমরেন্দ্র রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও, রাষ্ট্রপতি ভবন জানিয়ে দিয়েছে, বিল এখনও রাজ্যপালের টেবিলেই রয়েছে।
এরই প্রতিবাদে রাজ্যের মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদদের দিল্লিতে নিয়ে এসে আজ যন্তর মন্তরে ‘রিলে ধর্না’-য় বসেছেন অমরেন্দ্র। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রের কৃষি আইন নাকচ করে বিধানসভায় বিল পাশ হলেও রাজ্যপাল তা আটকে রেখেছেন। রাজ্যপালের কোনও ভূমিকা নেই। তিনি শুধু ডাকবাক্সের কাজ করবেন। এত দিনে তাঁর রাষ্ট্রপতির কাছে এই বিল পাঠিয়ে দেওয়া উচিত ছিল।’’
অমরেন্দ্রর অভিযোগ, পঞ্জাবে রেল চালানো হচ্ছে না। পণ্যবাহী ট্রেন বন্ধ করে দেওয়ায় জ্বালানি থেকে সার, বিভিন্ন পণ্যের জোগানে টান পড়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে কয়লা না-পৌঁছনোয় গোটা রাজ্য ‘ব্ল্যাকআউট’-এর মুখে।
এই অভিযোগ উড়িয়ে কেন্দ্র আজ পাল্টা দাবি করেছে, পঞ্জাবে যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন বন্ধের জন্য দায়ী অমরেন্দ্র সরকারের অকর্মণ্যতা। এ দিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, ‘‘পঞ্জাব সরকারের উচিত চাষিদের সঙ্গে কথা বলে রেল অবরোধ তোলা। কৃষি আইনের বিরুদ্ধে যে রাজনৈতিক আন্দোলন চলছে, তাতে ইতি টানা।’’ জাভড়েকরের যুক্তি, পঞ্জাবের সাধারণ চাষিরা ধান বাজারে এনে বিক্রি করছেন। বাড়তি ফসলের দামের সুবিধা নিয়ে যাচ্ছেন। গত বছরের তুলনায় এ বছর অনেক বেশি ধান কেনা হয়েছে। অথচ রাজ্যের ৩২টি জায়গায় রেল অবরোধ চলছে। ফলে রেলের প্রায় ১২০০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। সীমান্তে সেনার রসদ পাঠাতেও সমস্যা হচ্ছে।
অমরেন্দ্র অবশ্য অবরোধের যুক্তি খণ্ডন করে কেন্দ্রের বিরুদ্ধেই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, চাষিরা পণ্যবাহী ট্রেন আটকানো হবে না বলে জানিয়ে দেওয়ার পরেও কেন্দ্র রেল চালু করেনি। ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য থেকে কয়লা ও সারের জোগানে টান পড়েছে।
কংগ্রেসের জন্য স্বস্তি খবর, পঞ্জাব থেকে নবজ্যোত সিংহ সিধুও দিল্লিতে এসে আজ অমরেন্দ্রর এই ধর্নায় যোগ দিয়েছেন। অমরেন্দ্রর সঙ্গে সিধুর টানাপড়েন দীর্ঘদিনের। অন্তত চাষিদের সমস্যার প্রশ্নে কংগ্রেসের দুই মেরুকে এক বিন্দুতে আনতে পেরে স্বস্তিতে কংগ্রেস নেতারা।