পাকিস্তান নিয়ে কেন্দ্রকে সতর্কবার্তা পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহের। —ফাইল চিত্র।
পঞ্জাবে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদের ‘নীতি’ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে সতর্ক করলেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ। একটি সাক্ষাৎকারে অমরেন্দ্র দাবি করেছেন, অক্টোবরে দিল্লিতে কৃষকদের অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে পাকিস্তান থেকে ড্রোনের মাধ্যমে ভারতে অস্ত্র পাচার বেড়ে গিয়েছে। সীমান্তে অনুপ্রবেশের চেষ্টাও হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমাদের দেশের পশ্চিম প্রান্তে একটি শত্রু মনোভাবাপন্ন দেশ রয়েছে। উত্তরে রয়েছে চিন। এই দু’টি দেশ এক হয়েছে। দেশের সেনাবাহিনীর ২০ শতাংশ ওই সীমান্তে নিযুক্ত। তাঁদের মনোবল যেন না হারায়। সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙে যায় এমন কাণ্ড যাতে না হয়, সে ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’’
২৬ জানুয়ারি দিল্লিতে কৃষক বিক্ষোভের পিছনে পাকিস্তানের হাত রয়েছে কি না সে প্রশ্নের উত্তরে অমরেন্দ্র বলেন, ‘‘আমি কাউকে দোষ দিচ্ছি না। তদন্তকারী সংস্থাগুলি খুঁজে বের করবে। কিন্তু প্রশ্ন হল, যখন ওই আন্দোলন শুরু হল, তখনই কেন ড্রোনের মাধ্যমে অস্ত্র পাচার বেড়ে গেল? কেন অস্ত্র এবং টাকা আসছে? কাকতালীয় ভাবে এটা আন্দোলনের সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়েছে এবং এতে আশ্চর্য হয়ে গিয়েছি।’’
সাক্ষাৎকারে অমরেন্দ্র আরও দাবি করেছেন, পাকিস্তান ভারতে অস্ত্র পাঠানোর পাশাপাশি অনুপ্রবেশ ঘটানোর চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে টাকাও ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। ‘স্লিপার সেল’ কাজে লাগিয়ে পাকিস্তান পঞ্জাবে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চাইছে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অমরেন্দ্র। গত নভেম্বরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে সাক্ষাতে আশঙ্কার কথা তিনি প্রকাশ করেছিলেন বলেও দাবি অমরেন্দ্রর। তিনি বলেন, ‘‘যখন সকলে কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে বড় বড় খবর করছে, তখন আমি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করি। গত অক্টোবরে কৃষকদের বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে পাকিস্তান থেকে ড্রোনের মাধ্যমে পঞ্জাবে অস্ত্রশস্ত্র আসা বেড়ে গিয়েছে। আমার আশঙ্কা এখানেই। কারণ ওই ড্রোনগুলি উপহার হিসাবে পাঠানো হচ্ছে না। আমরা ৩০টি ড্রোন আটক করেছি। কিন্তু আরও ২০ থেকে ৩০টি ড্রোন আমরা আটক করতে পারিনি।’’
অমরেন্দ্র আরও বলেছেন, ‘‘সরকারের সতর্ক থাকা উচিত। আমি বহু দিন ধরেই এই সতর্কবার্তা দিচ্ছি। ওরা অস্ত্র পাঠাচ্ছে। যে কোনও মুহূর্তে তারা স্লিপার সেলকে কাজে লাগাতে পারে। কারণ পঞ্জাবে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা পাকিস্তানের নীতি।’’ কৃষক বিক্ষোভের পিছনে ‘খলিস্তানি’দের হাত রয়েছে কি না, সেই প্রশ্নের উত্তরে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এটাই পাকিস্তান করতে চায়। আমি বলছি না ওরা খলিস্তানি। খলিস্তানি, নকশাল, শহুরে নকশাল এগুলি শুধু মাত্র নাম। ওঁদের মধ্যে বিভিন্ন মতাদর্শে বিশ্বাসী মানুষ আছেন। সেখানে বামপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাসীরাও আছেন। কারণ দক্ষিণ পঞ্জাবে তাঁদের প্রভাব রয়েছে। তাই আজ ওঁদের শহুরে নকশাল বলা অপ্রয়োজনীয়।’’ তাঁর মতে, লালকেল্লা দেশের গৌরব। সেখানে যে ঘটনা ঘটেছে তাতে তিনি ‘দুঃখিত’ বলে জানিয়েছেন অমরেন্দ্র। তাঁর মতে, ‘‘কৃষকরা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তাঁরা হিংসায় বিশ্বাস করেন না। তাঁরা যে হিংসায় যুক্ত ছিলেন, এ কথা আমি বিশ্বাস করি না। মনে হয় আন্দোলনে বাইরে থেকে লোক ঢুকেছিল। এমন অনেক লোক আছে। আমরা সীমান্তে রয়েছি। কেন্দ্র সরকারকে জানাচ্ছি সীমান্তে কী ঘটছে। তদন্তকারী সংস্থা খতিয়ে দেখবে সে দিনের ঘটনায় কাদের হাত রয়েছে।’’